শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:
ঈদগাঁওতে ফের শুরু হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের ভেল্কিবাজী। বিনা নোটিশে ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ। যে কারনে প্রায় ২৫ হাজার গ্রাহক চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ঈদগাঁওতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের লোডশেড’র মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ কখন আসবে জিজ্ঞাসা করা হলে লাইনে কাজ করা হচ্ছে এই অজুহাতে সারা দিনে ২ ঘন্টা বিদ্যুৎও দিচ্ছেনা পল্লী বিদ্যুৎ। ঈদগাঁওতে পিক আওয়ার অফ্ পিক আওয়ার মিলে গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৫ মেগাওয়াট। সেখানে কক্সবাজার থেকে সরবরাহ করা মাত্র ১ থেকে দেড় মেগাওয়াট। যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি কম। মুলতঃ এ কারণেই বাড়ছে ঈদগাঁওতে লোডশেডিং। ৫/ ৬ মাস আগে উপকেন্দ্রের ক্ষমতা কমের কথা বলে তারা পার পাওয়ার চেষ্টা করত, কিন্ত ৬/৭ বছর আগে এডিবির আর্থিক সহায়তায় প্রায় কোটি টাকার উপরে ব্যয়ে উপকেন্দ্রটির ক্ষমতা বাড়ানো হলেও সেই আগের অবস্থার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। এদিকে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে লোকজন ইফতার, তারাবি ও সেহরীর সময় বিদ্যুতের শংকা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে ২৫/৩০ বছর আগের পুরাতন লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করাতে এবং লাইনগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বার বার লাইনে বিভ্রাট ঘটছে। ঈদগাঁও উপকেন্দ্রের ইনচার্জ মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। জালালাবাদের গ্রাহক আবদু ছালাম জানান, ৪ ঘন্টা ধরে রাইচ মিলে ধান নিয়ে বসে আছেন। বিদ্যুতের দেখা না মেলাতে ধান মিলিং করা যাচ্ছে না। বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, অস্বস্তিকর গরমের কারনে দোকানে বসে ব্যবসা করা দুরুহ হয়ে পড়েছে।
সাংবাদিক এইচ এম রুস্তম আলী বলেন, সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে বাসায় ফিরে একটু স্বস্তিতে ঘুমানো পর্যন্ত যায় না, পল্লী বিদ্যুৎ এসব কি শুরু করেছে?
বঙ্কিম বাজারের সুমন বলেন জীবিকার তাগিদে সারাদিন আগুনের কুন্ডলীর পার্শ্বে বসে থাকতে থাকতে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত, তখন একটু স্বস্তির আশায় ফ্যানের কাছে গিয়ে সুইচ টিপলে পরে দেখা যায় বিদ্যুৎ নেই, কি সব অসহ্য যন্ত্রনা। ইসলামপুরের জসিম জানান, সারাদিন বিদ্যুতের দেখা না মিললেও মাস শেষে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের হাতে মোটা অংকের বিল ঠিকই ধরিয়ে দিচ্ছে।
ইসলামাবাদের গ্রাহক হানিফ জানান, ঈদগাঁওতে লোডশেডিং’র ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের একটা সিডিউল নির্ধারন করা দরকার, তা না হলে জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবেনা।
পোকখালী থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মনুজা বেগম জানান, তিনি গোটা ৪ ঘন্টা ধরে বসে আছেন ছেলের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য, কখন বিদ্যুত আসবে অপেক্ষা করে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করে বসে আছেন।
বাজারের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র সংলগ্ন জামে মসজিদের পেশ ইমাম জানান, বিদ্যুতের কারণে ট্যাংকে পানি মজুদ রাখতে না পারায় মুসল্লীদের প্রচুর কষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গ্রাহকেরা এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।