হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :

টেকনাফের ৮টি সরকারী, ১৩টি নতুন জাতীয় করণকৃত এবং ৪টি ১৫০০ স্কুলসহ মোট ২৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই বলে জানা গেছে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের প্রথম স্তর অতি গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্টানে প্রধান শিক্ষক না থাকায় লেখা-পড়া, স্কুল পরিচালনাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চরমভাবে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকগণ এসব স্কুলগুলোতে কোন রকম ‘ভারপ্রাপ্ত’ হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায় দীর্ঘ দিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকা স্কুলগুলোর মধ্যে রয়েছে ৮টি সরকারী প্রাইমারী স্কুল, ১৩টি নতুন জাতীয় করণকৃত সরকারী প্রাইমারী স্কুল এবং ‘বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে ১৫০০ স্কুল স্থাপন’ প্রকল্পের ৪টি স্কুল। উপজেলার ৩৪টি সরকারী প্রাইমারী স্কুলের মধ্যে অবসর গ্রহণ জনিত কারণে ৮টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য হলেও দীর্ঘ সময় ধরে তা পুরণ হয়নি। অপরদিকে নতুন জাতীয় করণকৃত ২৫টি স্কুলের মধ্যে ১৩টি সরকারী প্রাইমারী স্কুলে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের অভাবে পদ গুলো পুরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। দীর্ঘ সময় ধরে প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ এবং পদোন্নতি বন্ধ থাকায় পদ গুলো বছরের পর বছর ধরে শুন্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রধান শিক্ষক বিহীন ৮টি সরকারী প্রাইমারী স্কুলগুলো হচ্ছে হোয়াইক্যংয়ের কেরুনতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৈংগাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোয়াইক্যং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হ্নীলার রঙ্গিখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহারছড়ার দক্ষিণ শীলখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেকনাফ সদরের পল্লানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেন্টমার্টিনের জিনজিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌরসভার টেকনাফ বার্মিজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

১৩টি নতুন জাতীয়করণ সরকারী প্রাইমারী স্কুল হচ্ছে হোয়াইক্যংয়ের হরিখোলা শিশু কল্যাণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ হোছন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উনছিপ্রাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোয়াইক্যং নোয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেশখালীয়াপাড়া সরকারী বিদ্যালয়, রোজারঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হ্নীলার আলী আকবরপাড়া সরকরী প্রাথমিক, দরগাহপাড়া সুফিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাদীমুরা এমআর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেকনাফ সদরে বড় হাবিবপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর্ডার গার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবরাং চান্দলীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহারছড়া নোয়াখালীয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

‘বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে ১৫০০ স্কুল স্থাপন’ প্রকল্পের ৪টি স্কুল হচ্ছে কচুবনিয়া এমপি বদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহারছড়ার কচ্ছপিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শামলাপুর জব্বারিয়া শাহীন-শরীফ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীরডেইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উপজেলার ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় স্কুলের শৃংখলা রক্ষা, পরিচালনা কমিটি গঠনসহ আভ্যন্তরীণ কর্মকান্ড পরিচালনায় শিক্ষকদের মধ্যে কোন্দল, দলাদলি থাকায় পড়ালেখায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রধান শিক্ষক না থাকা স্কুল সমূহে লেখাপড়ার মান দিন দিন বিঘœ হচ্ছে স্বীকার করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাষ্টার এরশাদুর রহমান দ্রুত সময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এবং সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির দাবী জানান। উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশীষ বোস বলেন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি বন্ধ থাকায় এ সংকট বিরাজমান রয়েছে। অভিভাবক মহল কোমলমতি শিশুদের লেখা-পড়ার স্বার্থে এব্যাপারে এলাকার এমপি আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি সিআইপির আন্তরিক প্রচেষ্টা কামনা করেছেন।