শাহীনশাহ, টেকনাফ
টেকনাফে খারাংখালী বাজারের দীর্ঘদিনের দুই দোকান ব্যবসায়ীকে আটক করার প্রতিবাদে বাজার কমিটি ও এলাকাবাসী মহাসড়কে টায়ার ও ব্যরিকেড দিয়ে সড়ক অবোরোধ করা হয়। দীর্ঘ দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধে চরম দূর্ভোগে পড়ে উভয় দিকের যাত্রীরা। এতে তেমন কোন আহতের খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভোর ৩ টায় টেকনাফ থানার একদল পুলিশ খারাংখালী এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম ও আব্দু সালাম প্রকাশ ভুলুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই সহোদরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সকালে এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বাজার কমিটির লোকজন ও এলাকাবাসী সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে সাড়ে ৯ টায় পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে। এলাকায় উত্তেজনা বাড়লে ঘটনাস্থলে টেকনাফ থানা পুলিশের কয়েকটি দল ও ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক আবু রাসেল ছিদ্দিকীর নেতৃত্বে একদল বিজিবি পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগে প্রায় ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও একাধিক সওদাগরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সওদাগর আবুল কাশেম ও আব্দু সালাম দীর্ঘ দিনের মুদির দোকানী ও বিকাশ ব্যবসায়ী। তারা কোন ধরণের অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। পুলিশ ইয়াবা উদ্ধারের নামে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক অবরোধ করা হয়। পুলিশের দাবী ইয়াবা উদ্ধারের অভিযানে চিহ্নিত কয়েকজন সন্ত্রাসী ও ইয়াবা ব্যবাসায়ীর ইন্ধণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
আব্দু সালামের স্ত্রী হালিমা বেগম জানান, রাত ৩ টায় একদল পুলিশ বাড়িতে ঢুকে ইয়াবা উদ্ধারের নামে তল্লাশি চালায়। কোন ইয়াবা না পেয়ে বিকাশের রক্ষিত নগদ প্রায় ১০ লাখ টাকা, বিকাশের দৈনন্দিন হিসাবের বহিটি নিয়ে যায়। পাশাপাশি বাসুর (স্বামীর ভাই) বাড়ি থেকে ৩ ভরি স্বর্ণ ৪২ হাজার টাকাসহ তাকেও আটক করা হয়। তার দাবী স্বামী বৈধ একজন ব্যবাসয়ী। তাদের অযথা হয়রানী করা হচ্ছে। স্থানীয় মেম্বার জাহেদ হোসাইন তারা বৈধ ব্যবসায়ী দাবী করে বলেন, তাদের বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণ লুট করার বিষয়টি শুনেছেন। বাজার কমিটির সভাপতি শেখ শাহ আলম দুই দোকানদারকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, পুলিশকে সহযোগিতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মইন উদ্দিন জানান, ইয়াবা উদ্ধারের বিশেষ অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ইয়াবার সরঞ্জমাদি পাওয়া গেছে। পাশাপাশি যারা সরকারী কাজে বাঁধা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কত রাউন্ড গুলি ফায়ার করেছে এবং কি ইয়াবার সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে তা নিশ্চিত করতে পারেন নি।
এ দিকে পুলিশের কথিত ইয়াবা উদ্ধারের নামে বিভিন্ন বৈধ ব্যবসায়ীকে হয়রানী করার পাশাপাশি ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটকের পর মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী।