চকরিয়ায় ইভতিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ৪দফা হামলা
আবদুল মজিদ ,চকরিয়া :
চকরিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়য়ের এক ছাত্রীকে ইভতিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীসহ ৪জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন প্রতিকার না পেয়ে হামলকারী বখাটে সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবীতে গতকাল ৩০এপ্রিল রাত ৮টায় কাফনের কাপড় পড়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অভিনব প্রতিবাদ করেছে ভূক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পুকপুকুরিয়া নিজপানখালী গ্রামের শাহ আলম ড্রাইভারের স্ত্রী আমেনা বেগম বুলু জানিয়েছেন, পৌরসভার মৌলভীরকুম বাজার এলাকার মো: আলীর বখাটে ও সন্ত্রাসী পুত্র আরমান উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল বখাতে তার স্কুল পড়–য়া মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার আসার সময় নানাভাবে উত্যাক্ত করে আসছিল। উত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি তার স্কুল পড়–য়া মেয়ে ও রাকিবুল ইসলাম হুদয়কে স্কুলে যাওয়ার পথে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ওই ঘটনায় রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী মানবন্ধন ও বিক্ষোভ করে। ইভতিজিং ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত তা আমলে নিয়ে চকরিয়া থানার ওসিকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলায় (নং জিআর ১১০/১৭, সিআর ২৬৭/১৭) ক্ষিপ্ত হয়ে পূণরায় হামলা চালিয়ে মা সহ ৩জনকে পূণরায় জখমের ঘটনায় আদালতে ফের আরো একটি মামলা দায়ের করেন এবং আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সরাসরি গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। ওই মামলায় ৩জন আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। সম্প্রতি বখাটে সন্ত্রাসী আরমান সহ অপরাপর আসামীরা জামিনে এসে গত ২৭এপ্রিল বিকেল ৪টায় ইভতিজিং ও হামলার শিকার পরিবারের উপর আরো দু’দফায় হামলা চালিয়ে হাড় ভাঙ্গা জখম করেছে। সংবাদ সম্মেলনে আমেনা বেগম বলেন, ৪র্থ দফায় হামলার ঘটনায় গতকাল ৬জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, বখাটে সন্ত্রাসী আরমান উদ্দিন, বোরহান উদ্দিন, তাদের পিতা মো: আলী, তার চাচা আবুল হোসেন, হুমায়রা বেগম ও তাহেরা বেগমসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪জনকে। থানার অফিসার ইনচার্জ লিখিত অভিয্গো পাওয়ার পর উপপরিদর্শক আশ্রাফুল ইসলামকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু থানার এসআই আশরাফ তদন্তে না গিয়ে উল্টো বাদীকে নানাভাবে নাজেহাল করছেন বলে অভিযোগ করেন। ভূক্তভোগী পরিবারের ৬জন সদস্য কাফনের কাপড় পড়ে শেষ আশ্রয় হিসেবে পুরো পরিবারের নিশ্চিত মৃত্যুর কথা জানিয়ে আমেনা বেগম বলেন, আমাদের রক্ষার কেউ নেই। সরকারের উর্ধ্বতন প্রশাসনিক দপ্তর হস্তক্ষেপ না করলে আমাদের মৃত্যু অবদারিত। এতো নির্যাতন আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। ভবিষ্যত আর কোন মা বোন- ছেলে-সন্তান ইভতিজিং কিংবা কোন অপরাধের বিচার পাবেনা বলে জানান। সংবাদ সম্মেলনে তার স্বামী শাহ আলম, স্কুল পড়ুয়া ৩পুত্র সহ ৬জন উপস্থিত ছিলেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এসআই আশরাফকে বলা হয়েছে। পরবর্তী বিষয়ে খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।