এম.এ আজিজ রাসেল

সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পেয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। ব্রিটিশ আমল থেকে এই দ্বীপে বসবাস শুরু হয় মাত্র ১১জন মানুষের। বর্তমানে এখানে ১০ হাজার লোক বসবাস করে। এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হলো পর্যটন, মৎস্য আহরণ ও কৃষি। তবে কৃষিতে জড়িত পরিবারের সংখ্যা নগন্য। অধিকাংশ মানুষ পর্যটন ও মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি পর্যটন ব্যবসা বন্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। একই সাথে দ্বীপের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পর্যটন বন্ধসহ মৎস্য আহরণ করতে না পারলে, ১০ হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে। তাই সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও বাসিন্দাদের রক্ষায় প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন। নচেৎ অপার সম্ভাবনাময় এই দীপ রক্ষা করা কঠিন হয়ে উঠবে। ৩০ এপ্রিল রবিবার দুপুরে শহরের অভিজাত একটি হোটেলের বলরুমে সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ রক্ষা ও উন্নয়ন পরিষদ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। সংগঠনের আহবায়ক শিবলুল আজম কোয়ায়শীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ
মুজিবুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আমিন, ফিরোজ আহমদ, সাবেক মেম্বার আবদুর রহমান ও মৌলানা আবদুর রহমান। বক্তারা বলেন, আমরা সেন্টমার্টিন ঘিরে বেঁচে আছি। পর্যটন ব্যবসা ও মৎস্য আহরণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করে আসছি। এই দ্বীপ রক্ষায় অন্যদের তুলনায় আমাদের মায়াকান্না বেশি। কিন্তু কতিপয় মহলের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রে আমাদের পথে বসার উপক্রম সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার দোহায় দিয়ে বেলা নামের একটি এনজিও সংগঠন নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আদালত থেকে রায় নিয়ে দ্বীপবাসীকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। একই সাথে পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ জারি করে। এতোদিনের স্বপ্ন কিভাবে ধ্বংস করা যায়। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু ছাড়পত্র চাইতে গেলে ঘটে নানা বিপত্তি। আবেদনের পরও বছরে পর বছর পার হয়, কিন্তু ছাড়পত্র পাওয়া যায়না। এটা কি আমাদের দোষ? এর চেয়ে বরং আমাদের মেরে ফেলাই উত্তম হবে। বক্তারা আরো বলেন, আমরা এই দেশের নাগরিক। মৌলিক অধিকার পেয়ে আমার বসবাস করতে চাই। কিন্তু মৌলিক অধিকার অন্যরা পাবে আর আমরা দ্বীপ বাসী পাবোনা এটা কেমন বিচার? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। সেন্টমার্টিনেও অল্প সময়ে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আরো হবে। কিন্তু এখানকার মানুষের কথাও চিন্তা করতে হবে সরকারকে। তাই দ্বীপ রক্ষার পাশাপাশি মানুষের কথাও বিবেচনায় এনে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক। যে নীতিমালায় দ্বীপ রক্ষার করণীয় সবকিছু উল্লেখ থাকবে। নীতিমালা প্রণয়ন হলে আমরা তার আলোকে ব্যবসাসহ যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবে। সাংবাদিক সম্মেলনে জাপান প্রবাসী জাফর প্রিন্স বলেন, দীর্ঘ প্রবাস জীবন থেকে দেশে এসে সেন্টমার্টিনে ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করি। কিন্তু ষড়যন্ত্র হলে আমার বিনিয়োগ হুমকীর মুখে পড়বে। এমন হলে অন্য কোন প্রবাসী আর সেন্টমার্টিনে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসবে না। সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ রক্ষা ও উন্নয়ন পরিষদের রিয়াজ উদ্দিন মোশারফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টুয়াক সভাপতি রেজাউল করিম, মোঃ ছৈয়দ আলম, আবদুর রহিম জিহাদীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।