বিদেশ ডেস্ক:

গত জুলাইয়ে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যূত্থানে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও ৪ হাজার কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে দেশটির সরকার। তাদের মধ্যে বিচার মন্ত্রণালয়ের এক হাজার কর্মীও রয়েছে ও সমসংখ্যক সেনাসদস্য এবং শতাধিক বিমান বাহিনীর পাইলট রয়েছেন। রবিবার দেশটির কর্মকর্তাদের বরাতে এই তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, টিভি ডেটিং অনুষ্ঠানও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অনলাইন তথ্যকোষ উইকিপিডিয়া ব্লক করে রাখা হয়েছে। সরকারি গেজেটে জানানো হয়, জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকিস্বরুপ ও সন্ত্রাসী সংগঠসের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা আশঙ্কায় ওই কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এর আগে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইসলামি বক্তা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী হওয়ার অভিযোগে তুরস্কের পুলিশ বাহিনীর ৯হাজারেরও বেশি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। গত বছরের ব্যর্থ অভ্যূত্থানের জন্য গুলেনকে দায়ী করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান।

বিরোধীদের আশঙ্কা ধীরে ধীরে কর্তৃত্ববাদী সরকারে রুপ নিচ্ছে তুর্কি। টিভি অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কুর্তুলমাস বলেছিলেন, এসব অনুষ্ঠান তুর্কি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না। তিনি বলেন, এই অদ্ভূত অনুষ্ঠাগুলো পরিবারে ভাঙন ধরায়।

গত বছরের জুলাইয়ে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার নেপথ্যে ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করে আসছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ানের তুর্কি সরকার। ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য শুরু থেকেই গুলেনকে দায়ী করে আসা হচ্ছে। ১৯৯৯ সাল থেকে গুলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। নির্বাসনে থেকেই তিনি ‘হিজমেত’ নামক একটি আন্দোলন পরিচালনা করেন। ২০১৩ সালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন চলাকালে এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে গুলেনপন্থীরা।

সর্বশেষ এই অভিযান গত কিছুদিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সর্বব্যাপী অভিযান। বিতর্কিত গণভোটে তুর্কি প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরদোয়ানের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব পাস হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই এ অভিযান শুরু হয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, বিভক্তির গণভোটে জয়ের পর এরদোয়ান স্বৈরতান্ত্রিক হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। গণভোটের দুই দিনের মাথায় তুর্কি পার্লামেন্ট নয় মাস ধরে চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে।