দায়িত্ব ও কাজের ধরনের বিভিন্নতায় বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল কাজ ‘গোয়েন্দাগিরি’ হলেও দেশভেদে এদের দায়িত্ব ও দক্ষতার তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। মোটাদাগে একটি গোয়েন্দাসংস্থাকে দেশের ভেতরে ও বাইরে দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের পাশাপাশি নানা ধরনের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হয়। নজরদারি কার্যক্রম, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, দেশে এবং বিদেশের কুটনৈতিক তৎপরতার উপরেও নজর রাখতে হয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের।
নিরাপত্তা বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্তের কার্যক্রম চলে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে। যেখানে সাধারণ কম্পিউটার ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রবেশ প্রায় অসম্ভব। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গোপনে কাজ করে থাকেন। তাই আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সেরকমভাবে তথ্য জানতে পারেন না।
বর্তমানে কোন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সব থেকে দুর্ধর্ষ? ইন্টারনেটের বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে সার্চ করলে বিগত পাঁচ বছরের যেসব তালিকা পাওয়া যায় সেগুলোর অধিকাংশই করেছে কয়েকটি অখ্যাত ও ভুঁইফোড় সংস্থা। এছাড়া ভিডিও শেয়ারিংয়ের ওয়েবসাইট ইউটিউবে রয়েছে অসংখ্য প্রামাণ্যচিত্র যেগুলোতে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য না পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তবে ফরেন পলিসি, এবিসি নিউ পয়েন্ট, এক্সপার্ট সিকিউরিটি টিপস, দি মেশ নিউজ, জি নিউজ এবং স্টোরি পিক নামক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে করা কয়েকটি তালিকা পাওয়া যায়, যেখানে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্তে বেশ মিল রয়েছে। এসব সূত্রের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বর্তমান সময়ের বিশ্বের সব থেকে দুর্ধর্ষ দশ গোয়েন্দা সংস্থার এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে।
১. মোসাদ
বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সব থেকে দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার নাম মোসাদ (MOSSAD)। মোসাদ ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা যা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সরাসরি পরিচালিত হয়ে থাকে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী সংস্থাটির প্রধান। পৃথিবীর সব জায়গাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে অপারেশন চালানোর সক্ষমতা রাখে ইসরাইল সরকারের এই বিশেষ এলিট বাহিনী।
মোসাদ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর। সংস্থাটির বর্তমান প্রধানের নাম ইয়োসি কোহেন। তিনি গত বছর নিযুক্ত হয়েছেন।এই সংস্থার সদস্য রয়েছে হাজারের উপরে। গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত অসংখ্য দুর্ধর্ষ অভিযান পরিচালনা করেছে এই মোসাদ।
মোসাদ সাধারণভাবে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বৈদেশিক নীতি-নির্ধারণে সহায়তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা, ড্রোন আক্রমণ, গুপ্ত কারাগার পরিচালনা, বিশ্বের বড় বড় করপোরেশনের নীতিনির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
মোসাদের এই কাজের বাজেটও কারও জানা নেই। মোসাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এমএসএস, এফএসবি, এমআইএসআইআরআই, হিজবুল্লাহ এবং হামাস।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বিখ্যাত অপারেশনগুলো হচ্ছে- ১৯৬০ সালে আর্জেন্টিনায় আইখম্যান হান্ট, ১৯৬৫ সালে হেবাররত চুকারস হত্যা, ১৯৬৩-৬৬ সালের অপারেশন ডায়মন্ড, ১৯৭২ সালের মিউনিখ অলিম্পিকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ, ১৯৯০ সালের অপারেশন জেরাল্ড বুল কিলিং, ১৯৯২ সালের আতেফ বেইসো হত্যাকাণ্ড, ২০১০ সালের মোহাম্মদ আল মাবহু হত্যাকাণ্ড।
১৯৬০ সালে খবর পাওয়া যায় যে, নাৎসি নেতা এডলফ ইকম্যান আর্জেন্টিনাতে পালিয়ে রয়েছে। মাত্র পাঁচজন সদস্য নিয়ে মোসাদ এই নাৎসি নেতাকে আর্জেন্টিনা থেকে ইসরাইলে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করে। প্রতিটি মহাদেশেই মোসাদের এরকম অভিযান পরিচালনার ইতিহাস রয়েছে। ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় ‘যেকোনো’ কিছু করতে প্রস্তুত থাকে সংস্থাটি। মোসাদের গোয়েন্দা সাফল্য বেশ সুপরিচিত এবং জনপ্রিয়।
মোসাদের সব থেকে শক্তিশালী দিক হচ্ছে এদের প্রযুক্তি এবং মেধা। গোয়েন্দা প্রযুক্তি উৎপাদন, গোয়েন্দা অস্ত্র-শস্ত্র তৈরিতেও বিশ্বের এক নম্বর এই গোয়েন্দা সংস্থাটি। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে মোসাদের ব্যবহৃত মিগ-২১ বিমানের কারণে মাত্র ছয় দিনে আরবদের সাথে জয়লাভ করতে ভুমিকা রাখে।
তবে মোসাদের কার্যক্রম নিয়েও নানা সমালোচনা আছে। জাতিসংঘে সংস্থাটির ভূমিকা নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে। মোসাদ গুপ্তহত্যায়ও বিশেষ পারদর্শী। তারা বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুপ্তহত্যা ঘটিয়েছে এবং এসব ঘটনা প্রমানিত হওয়ার পরও তাদের পক্ষ থেকে কোন দোষ স্বীকার করা হয়নি।
জনশ্রুতি রয়েছে পিএলও এর জনপ্রিয় নেতা ইয়াসির আরাফাত হত্যার পিছনে মোসাদের হাত ছিল। এটি জানা যায় যে এই নেতাকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করে মোসাদ।
২. সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ
সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এবং অন্যতম তুখোর গোয়েন্দা সংস্থা যা সিআইএ (CIA) নামে বেশি পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। এটি একটি স্বাধীন সংস্থা, যার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত অফিস অফ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস (OSS)-এর উত্তরসূরী হিসেবে সিআইএর জন্ম। এর কাজ ছিলো যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা। ১৯৪৭ সালে অনুমোদিত হওয়া ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সিআইএ গঠন করা হয়।
সিআইএর প্রাথমিক কাজ হচ্ছে বিদেশি সরকার, সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা জাতীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে তা সরবরাহ ও পরামর্শ প্রদান করা। সিআইএ এবং এর দায়বদ্ধতা ২০০৪ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।

২০০৪ সালের ডিসেম্বরের পূর্বে সিআইএ ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। এটি শুধু নিজের কর্মকাণ্ডই নয়, বরং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করতো। কিন্তু ২০০৪ সালে অনুমোদিত ইন্টেলিজেন্স রিফর্ম অ্যান্ড টেররিজম প্রিভেনশন অ্যাক্ট, ২০০৪ দ্বারা তা পরিবর্তিত হয়। সিআইএ প্রেসিডেন্টের অনুরোধে গোপন কার্যক্রমেও অংশ নেয়। এর পাশাপাশি আধাসামরিক অপারেশন এবং অন্য দেশে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অপারেশন পরিচালিত হয়ে থাকে বিশেষ কার্যক্রম বিভাগের মাধ্যমে।
সিআইএ পৃথিবীর সব ধরনের ডিভাইসে একসেস নিতে পারে। বিশেষ সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে অনলাইন-অফলাইনের সব ধরনের তথ্য তারা পেতে পারেন। সিআইএর মতো গোয়েন্দা সংস্থাকে ফাঁকি দেয়ার জন্য সন্ত্রাসীরা ডেটা এনক্রিপশন পদ্ধতির আশ্রয় নেয়।
এর সদর দফতর ভার্জিনিয়ার ল্যাংলের জর্জ বুশ সেন্টার ফর ইন্টেলিজেন্সে। বর্তমান পরিচালক মাইক পম্পেও। সংস্থাটির দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ৯/১১ এর বিমান হামলা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। আফগানিস্থানে ১০ লাখ সোভিয়েত সৈন্যের আগমন সম্পর্ক কোনো তথ্য তারা পায়নি এবং ইরাকে সাদ্দাম হোসেন সরকারের ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
সিআইএর সব থেকে নেতিবাচক দিক হচ্ছে এদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী হিটম্যান (ভাড়াটে দক্ষ খুনী) নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। যার মাধ্যমে তারা পলিটিক্যাল কিলিং করে থাকে।
৩. এমআইসিক্স
জেমস বন্ড সিরিজের মুভিগুলো বেশ জনপ্রিয়। এজেন্ট ০০৭ যিনি ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্ট এজেন্সি এমআইসিক্সের (MI6) দুর্ধর্ষ স্পাই থাকেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে থাকেন। জেমস বন্ড মুভির মতো হয়তো বাস্তবে স্পাইরা কাজ করেন না। কিন্তু বাস্তবে এমআইসিক্স কাজ করে।
এমআইসিক্স ব্রিটিশ মিলিটারির ইন্টেলিজেন্স এর একটি বিশেষায়িত শাখা। সংস্থাটির অফিসিয়াল নাম সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এসআইএস)। ১৯০৯ সালের অক্টোবরে সিক্রেট সার্ভিস ব্যুরো নামে এটি গঠিত হয়। ওই সময়ে ব্যুরো নেভাল ও আর্মি সেকশন নামে দু’টি বিভাগে কাজ করত। নেভাল বিভাগের কাজ ছিল অন্য দেশে গোয়েন্দাগিরি। অন্যদিকে আর্মি বিভাগের কাজ ছিল অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দমন। পরে নেভাল বিভাগের নাম দেয়া হয় এমআই সিক্স আর আর্মি বিভাগের নাম দেয়া হয় এমআই ফাইভ।
এসআইএসের সদর দপ্তর লন্ডনের এসআইএস বিল্ডিং। বর্তমান এসআইএস প্রধান এলেক্স ইয়ংগার। ১৯১১ সালে সিক্রেট সার্ভিস ব্যুরোর নাম পরিবর্তন করে সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস করা হয়। এমআই সিক্সের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশে হামলা ও হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার। এ জন্য সংস্থাটি ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ’র সহযোগিতা নিয়েছে আবার কখনো সহযোগিতা করেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে এ তিনটি সংস্থা একসাথেই কাজ করেছে বলে জানা যায়।
এশিয়া টাইমস পত্রিকায় সাংবাদিক রিচার্ড এম বানেটের এমআই সিক্সের হত্যাকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত তালিকা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন ২০০৩ সালের জুন মাসে প্রকাশ করে। ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে মোসাদের হিট স্কোয়াড কিডনের প্রধান রাফায়েল ইতান ইংল্যান্ডের হারফোর্ডে সফরের পর ব্রিটেনের নিরাপত্তা পলিসির বড় পরিবর্তন আসে। এই সফরের কিছু দিন পর লন্ডনে ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের দুই নেতাকে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের সাথে এমআই সিক্স ও মোসাদের সম্পৃক্ততা ছিল। ১৯৮৮ সালে তিনজন আইরিশ রিপাবলিকান আর্মিকে জিব্রালটারে হত্যা করে ইউকে স্পেশাল ফোর্সেস। এর সাথেও মোসাদের সম্পৃক্ততা ছিল।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার মোসাদের কাছে তার দেশের নাগরিকদের জন্য হুমকি এমন লোকদের একটি তালিকা দিয়েছিল। মিসরের জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট জামাল আবদুল নাসেরকে হত্যার পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছিল এমআইসিক্স। নার্ভ গ্যাস প্রয়োগে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল এই সংস্থা। অবশ্য ১৯৭০ সালে তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
১৯৬০ সালে হত্যার পরিকল্পনা করে কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রী জাতীয়তাবাদী নেতা প্যাটরিক লুমামবাকে। ১৯৬১ সালে তিনি নিহত হন। অফিসিয়ালি তাকে হত্যার অনুমতি দেয় হাওয়ার্ড স্মিথ নামের এক কর্মকর্তা। পরে এই কর্মকর্তাকে এমআই ফাইভের প্রধান বানানো হয়। ১
৯৭২ সালে জন ওয়াইম্যান আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক নেতাদের বোমা হামলা করে হত্যার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ওয়াইম্যান আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি নেতা লিটলজনসকে এ সংক্রান্ত একটি তালিকা দেয়। তালিকায় স্যামুয়েস কস্টেলো, সিন কারল্যান্ড ও সিন মাইকেল স্টাইফেনের নাম ছিল।
উল্লেখ্য যে বর্তমানে বিশ্বের সব থেকে চৌকষ ও দুর্ধর্ষ কমান্ডো বাহিনী হচ্ছে যুক্তরাজ্যের দি স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (এসএএস)
৪. এমএসএস
চীনের গোয়েন্দা সংস্থা গওজিয়া অ্যাংকেন বু অথবা মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি। এটি বিশ্বজুড়ে এমএসএস (MSS) নামে পরিচিত।
চীনা এমএসএসের অনেক কিছুই সাধারণ মানুষের অজানা। আর এর কর্মী সংখ্যা পৃথিবীর সব গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করা হয়।
২০০৫ সালের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই এমএসএস এর এক হাজার ইনফর্মার রয়েছে। এমএসএসের সদর দফতর চীনের রাজধানী বেইজিংএ অবস্থিত। এর জবাবদিহিতা স্টেট কাউন্সিল অব চায়নার কাছে। এমএসএসের সংস্থা প্রধান চেন ওয়েনকিং।
এর মূল দায়িত্ব হচ্ছে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বর্ডার সার্ভেইল্যান্স, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, কাউন্টার রেভিউল্যুশনারি কার্যক্রম দমন, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, বিশ্বের বড় করপোরেশনগুলোর নীতিনির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ।
এমএসএসের প্রধান বিচরণ এলাকা ম্যাকাও, হংকং, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, পশ্চিম ইউরোপ, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা ও সারা দুনিয়ার চাইনিজ বংশোদ্ভূত জনগণ।

এমএসএসের অনেক নামকরা এজেন্ট রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ল্যারি উ তাইচিন, ক্যাট্রিনা লেউং, পিটার লি, চি মাক, কো সুয়েন মো। ১৯৯৬ সালে এফ-১৫, বি-৫২সহ বহু সামরিক প্রযুক্তি পাচারের অভিযোগে ডং ফ্যাং চ্যু নামে বোয়িং কোম্পানির এক ইঞ্জিনিয়ার ধরা পড়েন।
ধারণা করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউকে, কানাডা, ইউরোপ, ভারত, জাপানে আন-অফিশিয়াল কাভারে যেমন ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, ব্যাংকার, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ হিসেবে কমপক্ষে ১২০ জন করে এমএসএস কর্মী অবস্থান করছেন।
পৃথিবীর অন্যসব গোয়েন্দা সংস্থাকেই এমএসএস তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে।
৫. এফএসবি
রাশিয়া এফএসবির মূল নাম ফেডারেলনায়া সুলঝবা বেজপাসনোস্তি রাশিস্কয় ফেডেরাটসি। সংক্ষেপে এটি এফএসবি (FSB) নামে পরিচিত। এটি স্থাপিত হয় ১৯৯৫ সালের ৩ এপ্রিল। তবে এত অল্প বয়স দিয়ে এফএসবির কার্যকারিতার প্রভাব ও ভয়াবহতার কথা মোটেও অনুমান করা যাবে না। অনুমান করতে হবে এর পূর্বসূরি সংস্থার কথা মাথায় রেখে।
রাশিয়ার বর্তমান গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির পূর্বসূরি ছিল দুনিয়া কাঁপানো গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি। আর কেজিবিরও আগে এর নাম ছিল চেকা। এফএসবির কর্মী সংখ্যা আনুমানিক লক্ষাধিক। এফএসবির সদর দফতর রাশিয়ার মস্কো শহরের ল্যুবিয়াঙ্কা স্কোয়ারে। এর জবাবদিহিতা করতে হয় প্রেসিডেন্ট রাশিয়ান ফেডারেশন।

এফএসবির সংস্থা প্রধান আলেকজান্ডার বর্টনিকভ। এফএসবির সাহায্যকারী সংস্থার নাম গ্রু। এফএসবির মোট ১০টি বিভাগ রয়েছে। এফএসবির মূল দায়িত্ব বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বর্ডার সার্ভেইল্যান্স, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি।
এফএসবির নামকরা এজেন্টের নাম আন্না চ্যাপম্যান। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এফএসবির গোয়েন্দারা যারা নিয়মিত এফএসবিকে গোপন তথ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে। এফএসবির সর্বমোট কর্মকর্তার সংখ্যা এবং এদের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ এদের নিজস্ব কৌশল হিসেবে গোপন রাখা হয়।
৬. বিএনডি
জার্মানির বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম জার্মান ভাষায় বুন্দেসন্যাচরিচটেনডিয়েনস্ট বা বিএনডি (BND)। ইংরেজিতে ফেডারেল ইনটেলিজেন্স সার্ভিস। জার্মান চ্যান্সেলরের অফিস থেকে সংস্থাটি সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হয় এবং চ্যান্সেলরের কাছে জবাবদিহি করে। এটা ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি নতুন করে দেশের পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে। এ সময় তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা একেবারে ঢেলে সাজাতে হয়। তখন তারা অনুভব করে, নিরাপত্তার জন্য তাদের গোয়েন্দা তথ্যের অভাব রয়েছে। সেই প্রয়োজন থেকেই তারা একটি বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা নির্মাণ শুরু করে। ১৯৫৬ সালের ১ এপ্রিল বিএনডি প্রতিষ্ঠিত হয়। মেজর জেনারেল রেইনহার্ডরের নেতৃত্বে সংস্থাটি নির্মিত হয়েছিল। শুরুতে এটা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সহযোগী হিসেবে কাজ করে।

এই সংস্থাটি জার্মানিতে ও বিশ্বের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকে। বিএনডি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস, মাদক সন্ত্রাস, প্রযুক্তির অবৈধ পাচার, অস্ত্র পাচার, সংঘবদ্ধ সন্ত্রাস সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ করে। বিএনডি আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা হলেও তারা মিলিটারি ও সিভিল ইনটেলিজেন্সের তথ্য সংগ্রহ করে।
বার্লিনে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে চার হাজার কর্মী একসঙ্গে কাজ করে। বিশাল এই কার্যালয়টি প্রায় ৩৫টি ফুটবল মাঠের সমান। বিএনডি বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইনটেলিজেন্স পরিচালনা, বিভিন্ন দেশে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরিতে কাজ করে।
এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের বৈদেশিক নীতিনির্ধারণে সহায়তা, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ প্রভৃতি বিষয়ে কাজ করে। এক কথায় বহির্বিশ্বে জার্মান স্বার্থের পক্ষে যা কিছু করার প্রয়োজন তারা সেটাই করে। বিদেশে জার্মান স্বার্থের প্রতি হুমকির ব্যাপারে তারা সরকারকে আগাম সতর্ক করার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
টেলিফোনে আড়ি পাতা ও ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেও তারা কাজ করে। তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বিস্তার, প্রযুক্তির সব ধরনের অবৈধ হস্তান্তর, সংঘবদ্ধ অপরাধ, অস্ত্র ও মাদক পাচার, মানি লন্ডারিং, অবৈধ অভিবাসন ও তথ্যযুদ্ধের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে।
তারা বৈদেশিক গুপ্তচরবৃত্তিতে জার্মানির একমাত্র গোয়েন্দা সংস্থা হওয়ায় সামরিক ও বেসামরিক উভয় ধরনের গুপ্তচরবৃত্তিতেই নিয়োজিত থাকে।
৭. আইএসআই
বিশ্বের সব থেকে বিতর্কিত গোয়েন্দা সংস্থার নাম পাকিস্তানের আইএসআই (ISI)। বিতর্কের দিক থেকে এই গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্বের প্রথম। ‘সরকারের ভিতরে সরকার’ পাকিস্তানের মাটিতে এই নামে বহুল পরিচিত ও সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংস্থাটির নাম আইএসআই।
১৯৪৮ এর মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত অস্ট্রোলীয় বংশদ্ভূত ব্রিটিশ আর্মি অফিসার ও পাকিস্তান সেনা বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল রবার্ট চাওথামের পরামর্শে ও তত্বাবধানে আইএসআই তৈরি হয়।
প্রাথমিকভাবে এর কাজ তিন বাহিনীর প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে সমন্নয় সাধন করা হলেও ১৯৫০ সাল থেকে একে আদালা করে শুধুমাত্র পাকিস্তান রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্বার্থ রক্ষা ও অখন্ডতা বজায় রাখার দায়িত্ব দেয়া হয়।
দেশে-বিদেশে সংস্থাটির সম্ভাব্য সদস্য সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি এবং এর মধ্যে অনেক তথ্য প্রদানকারীও রয়েছে। এই সংস্থার প্রধান কাজ পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ও অখন্ডতা রক্ষা করা।

যে সকল ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান, বৈদেশিক গোয়েন্দাসংস্থা রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তাদের উপর নজরদারি করা ও প্রয়োজনে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা করা। বিদেশে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা।
ভারতের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধে কৌশলগত ভাবে নিজেদের অগ্রবর্তী রাখার উদ্দেশ্যে প্রতিবেশী সব দেশকে প্রভাবিত করা। সরকার ও সেনা বাহিনীকে বাইরে ও ভিতর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা। সরকারের বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ করা।
তিনজন ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেলের অধীনে তিনটি কোর বিষয়ের জন্য ৭ টি বিভাগ কাজ করে। ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স এর সব কাজ মুলত ৭টি ডাইরেক্টরেটে দ্বারা পরিচালিত হয়।
আইএসআই কর্মীরা সাধারণত সেনাবাহিনীর এসএসজি, নৌ বাহিনীর ও বিমান বাহিনী থেকে আসে। তবে নিচু স্তরের কর্মীদের অনেক সমইয় প্যারা মিলিটারি ও পুলিশ বাহিনী থেকেও নেয়া হয়।
সংস্থাটির মূল প্রতিদ্বন্দ্বি র এবং মোসাদ। বিখ্যাত মিশন গুলো হচ্ছে- সোভিয়েত বিরোধী আফগান যুদ্ধ, কার্গিল যুদ্ধ, ওয়ার অন টেরর ওয়াজিরিস্তান, বালুচিস্তান এ আকবর বুগাতি হত্যা।
৮. রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং ‘র’
আলোচিত এই গোয়েন্দা সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাসাল ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮ সাল। নয়াদিল্লী হচ্ছে র’য়ের (RAW) কেন্দ্রবিন্দু। আনীল দশমনা এজেন্সির নির্বাহী প্রধান। র এর প্রধান এজেন্সি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। র ভারতের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা।
১৯৬৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও আইবি র ডেপুটি ডাইরেক্টর আর.এন.কাও র নেতৃত্বে ভারতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে Research and Analysis Wing।
এর প্রধান কাজ হল বিদেশি গোপন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার টেরোরিজম এবং গোপন অপারেশন চালানো। পার্শবর্তী দেশসমুহ যাদের সাথে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে ওই সব দেশের বৈদেশিক নীতি নির্ধারনে ভুমিকা রাখাও র এর অন্যতম কাজ।
র বিদেশি সরকার, ব্যাবসায়ী, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে থাকে এবং সে অনুযায়ী ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে র এর এজেন্ট রয়েছে। সবচেয়ে মজার তথ্য হচ্ছে র তাদের যাবতীয় গোয়েন্দা প্রযুক্তি ও অস্ত্র-শস্ত্রের জন্য মোসাদের সহযোগিতা পেয়ে থাকে।
৯. ডিজিএসই
ডিজিএসই (DGSE) ফ্রান্সের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা। প্রতিষ্ঠিত হয় ২ এপ্রিল ১৯৮২। ডিজিএসই ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চলে।
বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক প্রভাব এবং কাউন্টার ইন্টেলিজেন্ট অপারেশনে ডিজিএসই ডিজিএসআই নামক আরেকটি সংস্থার সাথে একসাথে কাজ করে। এর প্রধান কাজ হল বাইরের দেশের বিভিন্ন সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং তা মিলিটারি এবং নীতিনির্ধারকদের কে সরবরাহ করা।
ডিজিএসইতে কাজ করেন প্রায় ৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তা। এর সদর দফতর প্যারিসে।

১০. অস্ট্রেলিয়ার এএসআইএস
এএসআইএস (ASIS) অস্ট্রেলিয়ার সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা যার কাজ হল গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা, কাউন্টাল ইন্টেলিজেন্স কার্যক্রম এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাথে সহায়তা মূলক কাজ করা।
প্রতিষ্ঠত হয় ১৩ মে ১৯৫২। প্রধান কার্যালয় ক্যানবেরাতে।বর্তমান ডিরেক্টর নিক ওয়ার্নার। এই সংস্থাটি ২০ বছর পর্যন্ত গোপন ছিল এমনকি অস্ট্রেলিয়ার সরকারও এই এজেন্সি সম্পর্কে জানতো না। এর প্রধান কাজ হল এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ।

এই কাজের জন্যে বিভিন্ন দেশে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে রেখেছে ASIS। এর অন্যতম প্রধান কাজ হল অন্যান্য গোয়েন্দাসংস্থা গুলোর সাথে একসাথে কাজ করে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বাইরের যেকোনো হুমকি থেকে দেশের জনগনকে সুরক্ষা দেয়া।