মোহাম্মদ হোসেন,হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদাদাতা :

চট্টগ্রামের হাটহাজারী ১ নং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে স্থাপিত একটি কারখানার দূষিত বর্জ্যের কারণে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য এলাকাবাসী গত মঙ্গলবার(১৮এপ্রিল) উক্ত কারখানার সামনে মানববন্ধন করেছে। তাছাড়া যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বরাবরে এলাকাবাসী একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

স্মারকলিপির বিবরনে জানা যায়,বিগত দুইবছর পূর্বে সিটি কর্পোরেশনস্থ ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের নন্দীরহাটের পশ্চিম পার্শ্বে এফ.ডি এন এনার্জি লিমিটেড নামে একটি টায়ার কারখানা স্থাপন পূর্বক তৈল উৎপাদন করে আসছিল। কারখানা প্রতিষ্ঠার পর পরীক্ষামূলক ভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে মাত্র ছয় মাসের ছাড়পত্র নিয়ে চলে আসছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে এলাকাবাসী লক্ষ্য করছে এ কারখানার বর্জ্যরে কারণে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এতে করে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে,বায়ু দূষিত হচ্ছে। পানি মাটিসহ কারখানার বজ্য জলাশয়ে পড়ে মাছসহ জলজ প্রাণী সীমাহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বায়ুদূষণ ও কারখানার বর্জ্য খেয়ে মারা যাচ্ছে। শিশুরা শ্বাস কষ্টসহ নানারোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দূষিত বজ্যের দুগন্ধের জন্য এলাকার রাস্তা দিয়ে লোকজনের হাটাচলা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় খাজা গরীব নেওয়াজ নূরাণী মাদরাসার মাদরাসার পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের যাতায়তে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গত সোমবার রাতে এ কারখানা থেকে নির্গত বজ্যে থেকে হঠাৎ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। অগ্নিকান্ডের বিষয়টি হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আানে। কারখানার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী ছরা দিয়ে হালদা নদীতে পড়ে নদীর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

সংবাদপেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা এফ.ডি এন এনার্জি লিমিটেড এর প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সোহেল এর কাছে পরিবেশের ছাড়পত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি যে ছাড়পত্রটি দেখান তার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে শেষ হয়ে যায়। পরিবেশ অধিদপ্তর শর্ত সাপেক্ষে মাত্র ছয় মাসের জন্য ছাড়পত্রটি দিয়েছিল।ছাড়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে প্রশ্ন করা হলে উক্ত প্রকৌশলী এ ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান।

স্থানীয় গৃহীনি ফতেমা বেগম (২৭) বলেন , এফ.ডি এন এনার্জি লিমিটেড নামে এ টায়ার কারখানার বর্জ্যরে কারণে বিগত একমাস আগে তাঁর ১৬টি মুরগির বাচ্চা মারা গেছে। দূষিত বর্জ্য তৈরীকারী এধরনের কারখানা স্থাপান না করে যদি একটি পোশাক তৈরী কারখানা স্থাপন করলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হত। এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকেও রক্ষা পেত।

এলাকার বাসিন্দা মোঃ জামাল (৪৫) জানান, এলাকায় ২শ ৫০পরিবারের ১ হাজার ৫শ জনসাধারণ সীমাহীন স্বাস্থ্য ঝুকিঁর মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। মানুষ নানা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি মানব বন্ধন থেকে অবিলম্বে এ কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।