আবর্জনা যাচ্ছে নদীতে!

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৪:৫৩ , আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৫:১৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


নুরুল আমিন হেলালী:
কক্সবাজারের নতুন উপজেলা ঈদগাঁও’র একমাত্র স্রোতধারা নদী ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদী এখন আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

দক্ষিণ চট্রগ্রামের বৃহত্তম বাজার ঈদগাঁও বাজার, বাস স্টেশন ও নদী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীর গতিপথ বন্ধ করে দিচ্ছে। পরবর্তীতে সেখানে বেড়া বা দেয়াল দিয়ে নদী বক্ষে গড়ে তুলছে দোকানপাট ও ঘরবাড়িসহ বহুতল ভবন।

ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদী ঈদগড়ের পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ঈদগড় বাজার, গজালিয়া, ভুমরিয়া ঘোনা, ঈদগাঁও, জালালাবাদ, পোকখালী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

সুত্রমতে, এই নদীর পানি দিয়ে ঈদগড়, ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, চৌফলদন্ডী ও পোকখালী ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান চাষ করা হয়। এতে উৎপন্ন হয় কয়েক লাখ মন বুরো ধান।

এই নদী দিয়ে একসময় বর্ষায় মাল বোঝাই নৌকা, ইন্জিনচালিত বোট ও কার্গো বোট চলাচল করত। দখল-দুষণে এবং কালের ব্যবধানে সে সব দিন এখন হারানো ইতিহাস। এখন সেই ঐতিহ্যবাহী ফুলেম্বরী নদী অস্তিত্ব সংকটে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদগাঁও বাস ষ্টেশন ব্রীজের পশ্চিম দিকে, বাঁশঘাটা ব্রীজের আগে ও পরে বাজারের সব বর্জ্য, পলিথিন, প্লাস্টিকের অপচনশীল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এসব দুষণে ঈদগাঁও নদী ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
অপরদিকে গজালিয়া, ভোমরিয়া ঘোনা, খোদাইবাড়ী এলাকায় নদী তীরবর্তী গড়ে পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্য এবং নদী উপকুলে বসবাসরত বাসিন্দাদের বাসা-বাড়ির আবর্জনা সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন নদী পুনঃখনন না করায় নদীর অনেক অংশে বালি ও পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছ ফুলেশ্বরী নদী। এছাড়া সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের তদারকি না থাকায় নদী খেকোদের দখল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদী।

ঈদগাঁও উপজেলা নদী-খাল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ঈদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছৈয়দ আলম বলেন, নদীটিতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ পুর্বক প্রাকৃতিক মাছের অভয়ারণ্য ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় নদীটি পুনঃখনন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

পরিবেশ সংগঠক ও ঈদগাঁও উপজেলা সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের সেক্রেটারী সাংবাদিক কাফি আনোয়ার বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ আর কৃষিকে বাঁচাতে হলে ফুলেশ্বরী নদীকে দখল-দুষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

তাই এই ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও (ফুলেশ্বরী) নদী দখল-দুষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং বাজারের নাগরিক বর্জ্য-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।