এ.এম হোবাইব সজীব, মহেশখালীঃ
অনেকটা উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশেই হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত মহেশখালীর ১ টি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।
২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ প্রার্থী রয়েছে।
মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুইজনের মধ্যে।
তবে, ডামি প্রার্থী ছাড়া মেয়র পদের প্রধান দুই প্রার্থীই এবার বিরামহীনভাবে চালিয়েছেন গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচার।
প্রচারের শুরুর দিকে ভোটের মাঠে খুব একটা উত্তাপ না থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে উত্তাপ-উত্তেজনা বেড়ে যায়। বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলা-মামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভোটের মাঠ।
এমনকি এবারের নির্বাচনী সহিংসতায় ইতিমধ্যে উপজেলার কুতুবজোম -হোয়ানক ইউনিয়নে পাল্টাপাল্টি হামলায় আহত হয়েছে অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ভাঙচুর করা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি অফিস ও প্রচারের গাড়ী মাইক। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ থাকলেও আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীদের পেশিশক্তি প্রদর্শনের জেরে নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সহিংসতার আশঙ্কায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করলেও তাদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া এএসপি সার্কেল মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম।
তার দাবি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্রে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে এবং নির্বিঘ্রে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারেসেটা নিশ্চিত করেছেন। তবে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে ও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে ২০ সেপ্টেম্বরের এই নির্বাচন শেষে কে হাসবেন শেষ হাসিতা নিয়ে চলছে নানা জল্পনাকল্পনা।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে মোট চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আলহাজ মকছুদ মিয়া, নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সরওয়ার আজমের মধ্যে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন (মোবাইল ফোন) ও সারজিনা আক্তার (জগ) লড়ছেন। তবে বর্তমান মেয়র আলহাজ মকছুর মিয়ার স্ত্রী হওয়ার সুবাদর সারজিনা আক্তার নির্বাচনে কোনো প্রচারণা চালাচ্ছেন না।
মেয়র পদের ২ প্রার্থীসহ ৩ ইউপির প্রধান প্রার্থীর ভোটের লড়াইকে নিজেদের প্রেস্টিজ ইস্যু হিসেবেই নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামীলীগের জেলার নেতারা বেশ ক’দিন মহেশখালীতে এসে নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালিয়ে গেছেন। নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে দফায় দফায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা। তার পরেও তাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে সোমবার।
উপজেলা তিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাতারবাড়ী থেকে ৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন-
নৌকার প্রার্থী আবু হায়দার, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন (আনারস) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ, (টেলিফোন) প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী রুহুল, (টেবিল) প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর ছাত্তার,(মটর সাইকেল) উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মাস্টার রুহুল আমিন।
হোয়ানক ইউনিয়নে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, নৌকার মাঝি বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে (আনারস) প্রতীক নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল করিম, ওয়াজেদ আলী মুরাদ (মোটর সাইকেল), মীর কাশেম চৌধুরী (পাতা), বাবুল (সিএনজি)।
কুতুবজোম ইউনিয়নে ২ জন হেভিওয়েট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন হলেন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী এডভোকেট শেখ কামাল অপরজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন (চশমা) প্রতীক।
ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে আশস্ত রিটার্নি কর্মকর্তার নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মহেশখালী নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুলকার নাঈম তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মহেশখালী পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, নির্বিঘ্রে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। স্ব-স্ব ভোটার এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করা হবে, যাতে অনাকাক্ষিত কোনো ঘটনার সুযোগ না থাকে।’