সিবিএন ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে গতানুগতিক প্রস্তাব দেওয়া থেকে বিরত থাকার চিন্তা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল (বিএনপি)। দলটি ইসি পুনর্গঠনের চেয়ে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলেও দলের নেতারা মনে করেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন থাকলে যে কাউকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে সে কমিশন নিরপেক্ষ হবে না, তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি আদায় করতে পারলে তাদের প্রত্যাশিত নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব।

দলীয় সূত্র মতে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক, সার্চ কমিটি গঠন এবং সব দলকে নামের প্রস্তাবনা দেওয়া এই প্রক্রিয়ায় বিএনপির কোনো লাভ নেই। এ প্রক্রিয়ায় বিগত অভিজ্ঞতা বিএনপির জন্য লাভজনক হয়নি। তাই আন্দোলন কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দাবি আদায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের কথা ভাবছেন বিএনপি নেতারা।

 এ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন করেছি। কিন্তু তাদের অধীনে নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়েছে তা দেশবাসী দেখেছে। তারা দিনের ভোট রাতে করেছে। তাই বর্তমান সরকার যদি আগামীতে নির্বাচনকালীন সময়ে থাকে তাহলে তাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। তাই নির্বাচনের আগে এ সরকারকে সরে যেতে হবে। 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, নেতাদের নিয়ে দলের হাইকমান্ড বৈঠক করছেন ধারাবাহিকভাবে। বৈঠকে আন্দোলন-সংগ্রাম, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনসহ সার্বিক বিষয়ে যদি উদ্ভাবনী প্রস্তাব আসে সেটা গ্রহণ করা হবে। কীভাবে আরও তৎপর গতিশীল হওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করে দল সিদ্ধান্ত নেবে।

ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা স্বাধীনতার পর দেখেছি কোনো না কোনো পক্ষ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আমরা দেখিনি। এখন সামনে সুযোগ এসেছে ভালো নির্বাচন করার, ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করার। নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রশ্নে দলীয় ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি জরুরি হলো সরকার পরিবর্তন। এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে পাঁচজন ফেরেশতা দিয়েও যদি নির্বাচন কমিশন হয় তাতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এ সরকার রেখে নির্বাচন করা তামাশা, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু না। নেতাকর্মীদের মতামত শুনি তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।

এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন করেছি। কিন্তু তাদের অধীনে নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়েছে তা দেশবাসী দেখেছে। তারা দিনের ভোট রাতে করেছে। তাই বর্তমান সরকার যদি আগামীতে নির্বাচনকালীন সময়ে থাকে তাহলে তাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। তাই নির্বাচনের আগে এ সরকারকে সরে যেতে হবে। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তাহলেই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশাবাদী হতে পারবো।

 নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি জরুরি হলো সরকার পরিবর্তন। এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে পাঁচজন ফেরেশতা দিয়েও যদি নির্বাচন কমিশন হয় তাতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। 

ইসি পুনর্গঠনের আগে সব দলের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটা পরিস্থিতিই বলবে। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। -জাগো নিউজ