ঢাকা সংবাদদাতা:
যাত্রার বছর পার হতে না হতেই ভাঙন ধরেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)তে।

নতুন রাজনৈতিক দলটির ২০জন শীর্ষস্থানীয় নেতা এবি পার্টি ছেড়ে দিয়েছেন। গেলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিতে। তারা কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতা ছিলেন। এবি পার্টি গঠনে তাদের জোরালো ভূমিকাও ছিল।

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ ইবরাহিমের মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগদান করেন।

তাঁদের মধ্যে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ড. শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী এবং যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল আউয়াল মামুন ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে দলে যোগ দেন।

এছাড়া সহকারী সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, কেন্দ্রীয় নারী নেত্রী রেখা আকতার, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি নাজমুল হুদা অপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি উবাইদুল্লাহ মামুন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকীব, ব্রাম্মনবাড়ীয়া জেলা সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব তাফহীমুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থীরা ২০২০ সালের ২ মে এবি পার্টি গঠন করে। এর আহ্বায়ক হন সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্যসচিব হন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু। এবি পার্টির প্রধান দুই নেতাই জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ছিলেন।

মাত্র দেড় বছরের মাথায় কেন্দ্রীয় নেতাসহ ঢাকা মহানগরী ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পদত্যাগের ঘটনা ঘটলো। যা স্পষ্ট ভাঙনের সুর মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সবাইকে দলীয় ক্যাপ পরিয়ে এবং একটি ফুলের স্টিকার দিয়ে দলে বরণ করেন। এ সময় কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. হাসান নাসির, ফোরকান ইবরাহিম, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নুরুল কবিরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পদত্যাগকারী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকীব বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা এবি পার্টিতে যোগদান করেছিলাম শীর্ষ নেতৃত্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাই তাদের শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ বৃথা হবে বলে আমি মনে করি। একই সাথে তিনি বলেন, এবি পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের যে বৈশিষ্ট্য বা ব্যক্তিত্ব থাকা দরকার তা এবি পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে তারা ভালো কিছু উপহার দিতে পারবে না। ফলে তারা হতাশা থেকে পদত্যাগ করেছেন। এবি পার্টি থেকে পদত্যাগকারী সকলে আজ বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিতে যোগদান করেছেন বলেও জানিয়েছেন কল্যাণ পার্টির দফতর সম্পাদক আল আমিন ভূঁইয়া রিপন।

কল্যাণ পার্টিতে যোগ দিয়ে এবি পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সাবেক সভাপতি নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমরা আরেকটা রাজনৈতিক মুক্তিযুদ্ধ করতে চাই। এর জন্য একজন নেতা দরকার, সেই নেতা আমরা পেয়ে গেছি।’

এবি পার্টির দল গঠনের এক বছর সাড়ে চার মাসের মাথায় একসঙ্গে দল ছেড়ে গেলেন গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘তাঁরা গত বুধবার পদত্যাগ করেছেন। আমরা তাঁদের ওয়েলফেয়ারও দিয়েছি। তাঁরা এখন পছন্দের যেকোনো দলেই যেতে পারেন।