ফারুক আহমদ, উখিয়া:
উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে গর্ভবতী মা শামশু নাহার (৩০) ও নবজাতক শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মারা যাওয়া পরিবারের পক্ষে অভিযোগ করে বলা হয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আর টি এম আইয়ের দায়িত্বরত মিডওয়াইফ এর খামখেয়ালীপনা ও অদক্ষতার কারণে মা ও নবজাতককে আজ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে , সমুদ্র উপকূলীয় মন খালি এলাকায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি অবস্থিত । বর্তমানে সরকারি পদে কেউ কর্মরত নেই । আর টি এম আই সহ কয়েকটি এনজিও সংস্থা উক্ত পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে।
জানা গেছে, জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া গ্রামের ফরিদ আলমের গর্ভবতী স্ত্রী শামসুন্নাহার কে গত শুক্রবার ২৮ আগষ্ট সকালে আরটিএমের অ্যাম্বুলেন্স যোগে মনখালী পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বামী ফরিদ আলম অভিযোগ করে বলেন, গর্ভবতী স্ত্রী শামসুন্নাহারের প্রচন্ড ব্যথা সহ ঝুঁকি দেখা দিলে রোগীকে রেফার দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও এনজিও সংস্থার কর্মরত মিডওয়াইফ কোন অবস্থাতে তা শুনতে রাজি হননি । এমনকি রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে দেখা দিলে সাথে থাকা বয়োবৃদ্ধ মা রেফার দেওয়ার জন্য মিডওয়াইফের পা পর্যন্ত ধরেন। এতে তাদের মন গলেনি। উল্টো রোগীর স্বজনদের সাথে খারাপ আচরণ করে ।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ওই সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন আরটিএম আইয়ের মিডওয়াইফ সুমনতারা, সাবিনা, বিথীকা ও নীশি।
বড় বোন রাশেদা বেগম জানান, ওই দিন রাত ৮ টার দিকে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এক পর্যায়ে রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তখন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার দেন। রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পৌঁছলেও রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত ডাক্তার।
পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, একই দিন ভোর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গর্ভবতী শামসুন্নাহার কে। পরের দিন সিজার হলেও মৃত্যু সন্তান প্রসব হয়। ডাক্তারদের ভাষ্য সিজার করার অনেক আগেই নবজাতক মারা যান। তদুপরি রোগীর অবস্থা আরও অবনতি দেখা দিলে চট্টগ্রামের বেসরকারি ক্লিনিকের আইসিও তে রাখা হয়। ৪৮ ঘন্টার পর অর্থাৎ গত মঙ্গলবার ৩১ আগষ্ট ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মাহমুদ ইউচুপ বলেন জালিয়া পালংয়ের মনখালী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সরকারী ভাবে কেউ দায়িত্ব পালন করে না। এনজিও আরটিএমআই মাতৃ সেবা সহ গর্ভবতীদের কে ডেলিভারি করায় । দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও খামখেয়ালি পনার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানান।
নিহতের ভগ্নিপতি জাবেদ চৌধুরী বলেন, ডেলিভারি করতে পারলে নাকি নানা রকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে । জোর পূর্বক ডেলিভারি করতে গিয়ে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের করুন মৃত্যু হয়েছে ।
স্বামী ফরিদ আলম গর্ভবর্তী মা ও শিশুর মৃত্যুর জন্য আরটিএমআইয়ের মিডওয়াইফ কে দায়ী করেন।
এনজিও সংস্থা আরটিএমআই এর সুপার ভাইজার গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কি কারণে মৃত্যু হয়েছে আমরাও তদন্ত করে দেখব।