মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকেরা কক্সবাজারে অবস্থানের কারণে স্থানীয় জনসাধারণ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় জনসাধারণের এই ক্ষতি পূরণের দায়বদ্ধতা থেকে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর স্থানীয় জনসাধারণের কল্যাণে বিভিন্ন সময়ে যে মানবিক উদ্যোগ নিয়ে থাকে, নিঃসন্দেহে তা প্রশংসনীয়। এজন্য স্থানীয় জনসাধারণ এ অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পেয়ে থাকে। এসব কাজে প্রশাসন ইউএনএইচসিআর-এর সাথে সবসময় যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

রোববার ২৯ আগস্ট বিকেলে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে ইউএনএইচসিআর-এর সহায়তায় ‘One time cash support project for vulnerable Bangladesh in cox’sbazar’ এর আওতায় স্থানীয় জনসাধারণকে এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি একথা বলেন।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, স্থানীয় জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ও সংকট সমাধানে প্রশাসন সবসময় সজাগ রয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারের অফিস প্রধান মিস ইটা সুটে এবং কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল আলম।

ইউএনএইচসিআর প্রধান মিস ইটা সুটে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন-বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের পাশাপাশি কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিও নিজস্ব দায়বোধ থেকে ইউএনএইচসিআর সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে। এ কাজকে ইউএনএইচসিআর তাদের দায়িত্ব মনে করে। মিস ইটা সুটে আরো বলেন, কক্সবাজারের মানুষ ও বাংলাদেশ সরকার বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের কক্সবাজারে অবস্থানের সুযোগ করে দিয়ে বিশ্বে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এজন্য ইউএনএইচসিআর স্থানীয় জনসাধারণ ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ।

সভাপতির বক্তব্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন-প্রয়োজনের সময় ইউএনএইচসিআর প্রশাসন ও স্থানীয় জনসাধারণের পাশে থাকে। সংকট ও সমস্যায় এগিয়ে আসে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ইউএনএইচসিআর-এর এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচী মানুষের চাহিদা পূরণে কিছুটা সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ডিসি মোঃ মামুনুর রশীদ জেলার স্বাস্থ্য খাত সহ জেলার বিভিন্ন সেবা খাতে ইউএনএইচসিআর-এর চলমান সহায়তা কৃতজ্ঞতার সাথে তাঁর বক্তব্যে স্মরণ করেন।

বিশেষ অতিথি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, প্রায় ১৫ লক্ষ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকের ভারে কক্সবাজারবাসী জর্জরিত। এ অবস্থায় স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় ইউএনএইচসিআর-এর উদ্যোগ সমুহ মানুষের দুর্ভোগ লাগবে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। তিনি ইউএনএইচসিআর-এর এধরণের মানবিক ও মৌলিক চাহিদা সংক্রান্ত সহোযোগিতা সবসময় অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসনের ডিডিএলজি (উপসচিব) শ্রাবস্তী রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আমিন আল পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মোঃ নাসিম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিভীষণ কান্তি দাশ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সুফিয়ান, ইউএনএইচসিআর-এর লিয়াজো অফিসার ইফতেখার উদ্দিন বায়েজিদ, লাইভলীহোড অফিসার সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, রেড ক্রিসেন্টের পরিচালক, রেড ক্রিসেন্টের কো-অর্ডিনেটর আবছার আহমদ ও কেরামত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসংগত, ২ হাজার ৫ শত টাকা করে কক্সবাজার জেলার সদর, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ১৫ হাজার সহায় সম্বলহীন দুঃস্থ মানুষকে ইউএনএইচসিআর-এর এই এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে।