সংবাদদাতা : গত ২৬ আগস্ট সকাল ৯টায় রামুর চাকমারকুল ইউনিয়নের নিপা ব্রিকফিল্ডে হামলায় আহত চাষী ও জমির মালিকদের চেয়ারম্যান পুত্র ও তার লোকজন হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন  চাষী ও জমির মালিক পরিবার। এতে নিরাপত্তা হীনতায় ভোগছেন  গুরুতর আহত চাষী মনছুর ও জমির মালিক পরিবার ।

জমির মালিকদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে চাকমারকুলের কৃষ্ণ মোহন ধরের পুত্র অরবিন্দ গং থেকে খরুলিয়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র আবদুস সালাম গং ৩২ শতক জমি ক্রয় করেন। যার দাগ ৪৯৯৬ ও বিএস ৫৭৫। ১৯৯৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওই জমির রেজিষ্ট্রিমূলে ওই জমির বৈধ মালিক হন আবদুস ছালাম গং। এরপর থেকে ২৬ বছর ওই জমি ভোগ দখলে আছে আবদুস ছালাম গং। দীর্ঘবছর জমিটি মনছুর চাষ করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় রামু জুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠে ভূমিদস্যু চক্র। যার অংশ হিসেবে আবদুস ছালাম গংয়ের দীর্ঘ ২৬ বছরের ভোগ দখলীয় জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলমের। আবদুস ছালাম গংয়ের জমি দখলের উদ্দেশ্যে অন্য দাগের ভূয়া খতিয়ানও করেন চেয়ারম্যান ফরিদ। বিষয়টি বুঝতে পেরে আবদুস ছালাম গং আদালতে একটি মিচ মামলা দায়ের করেন। একই সাথে আদালত ওই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন।

তারা আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে আবদুস ছালাম গংয়ের জমি চাষা মনছুর দেখতে গেলে বাঁধা দেন চেয়ারম্যান ফরিদ গং । এসময় আবদুস ছালামের পরিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধা দেওয়ায় কারণ জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম ও মেম্বার মোবারক হোসেনগং  ২৫-৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে দা, কিরিচ, লোহার রড ও লাঠিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় আবদুস সালামের স্ত্রী সাবেকুন্নাহারসহ ৬ জন গুরুতর জখম হয়। আহতরা হলেন, চাষা মনছুর আলম, মোস্তফা, মিজান, শহীদ, সাবেকুন্নাহার ও নুর হাসেম। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তাঁরা চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত চাষী মনছুরের জখম বেশি হওয়ায় তার অবস্থা আশংকাজনক। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে আবদুস ছালামের স্ত্রী আহত সাবেকুন্নাহার বলেন, এই জমি বিগত ২৬ বছর ধরে আমরা ভোগ দখলে আছি। কিন্তু সম্প্রতি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জোরপূর্বক জবর দখল করতে পরিকল্পিতভাবে বর্বরোচিত হামলা চালায় আমাদের উপর। চেয়ারম্যানের কেনা জমির দলিলের ট্রেসম্যাপেও ৪৯৯৬ নং দাগে তাঁর জায়গার কোন অস্তিত্ব নেই। এব্যাপারে তিনি প্রশাসন ও স্থানীয় এমপির সহযোগিতা চেয়েছেন।

আহত পরিবারের সদস্য ফয়সাল জানান,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলার ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে হয়রানি করতে নানা কৌশল ও মিথ্যা অপপ্রচার প্রচার চালাচ্ছেন।

কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পিপি এড. আ.জ.ম মঈন উদ্দিন উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে বলেছেন চেয়ারম্যান ফরিদ আব্দুস ছালাম গং এর দলিলে জমি পাচ্ছে না।যদি দাবি করেন তা হবে বল প্রয়োগে দখল। বিষয়টি উভয়পক্ষের সার্ভেয়ার নিয়ে বসলে সমাধান হওয়ার কথা।

অভিযোগের বিষয়ে ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম কোনো মারামারি হয়নি  বলে জানান।