নির্বাচনী ইশতেহারে যা বললেন টুয়াক সভাপতি পদপ্রার্থী তোফায়েল আহমেদ

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২১ ১০:২৭ , আপডেট: ২৮ আগস্ট, ২০২১ ১০:৪০

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জাবেদ আলীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন টুয়াক সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের পর্যটনসেবী প্রতিষ্ঠান ট্যুর অপারেটস্ এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর নির্বাচন আগামী ৩১ আগষ্ট। বহু কাঙ্খিত এই নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। জোরসে চলছে প্রচারণা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কমিশন। এবারের মোট ভোটার সংখ্যা ৯৪।

সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠ গরম করে তুলেছেন বর্তমান সভাপতি তোফায়েল আহমেদ। তিনি বে- অফ বেঙ্গল ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী। প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন সী-হিলটপ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর স্বত্বাধিকারী, টুয়াকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান (জাহাজ) এবং রাঙাবালি ট্যুরস এন্ড ট্রাভলস এর স্বত্বাধিকারী আনোয়ার কামাল (দেয়াল ঘড়ি)। তারা সবাই নিজস্ব আঙ্গীকে ভোট প্রার্থনা করছেন।

তবে, সভাপতি পদে তোফায়েল আহমেদ বেশ চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছেন। যা শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেল হলরুমে টুয়াকের সকল সদস্য ও সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশ করেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জাবেদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তোফায়েল বলেন, আমি আপনাদের তোফায়েল আহমেদ, টুয়াকের তোফায়েল আহমেদ। আপনারে ভাই; বন্ধু, স্নেহ ও ভালবাসার তোফায়েল। টুয়াক আমার পরিচিতি। টুয়াক আমার প্রাণ। সদস্যরা আমার প্রেরণা; সঞ্জীবনী শক্তি,আস্থার ঠিকানা। টুয়াক আমার গৌরব, পথচলার সাহস। আমার তারুণ্য, যৌবন এবং জীবনের সোনালী সময়টুকু কেটেছে আপনাদের ভালবাসা স্নেহ, মমতায়। আমার হাত ধরে টুয়াক আজ সারাদেশে পরিচিত সংগঠন। টুয়াকের সুনাম দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও সমাদৃত। আমি জবাবদিহিতামূলক কাজ করেছি। আমার সময়কালে টুয়াকের সমৃদ্ধি। সভাপতি হিসেবে কি করেছি, না করেছি সব আপনারা জানেন। আমার সব সফলতা আপনাদের। ত্রুটি-বিচ্ছুতি ও ব্যর্থতা সবটুকুন আমার। সময় সুযোগ ও বাস্তবতার কারণে অনেক কাজ অসমাপ্ত। সংগঠনকে আরো বেশী গতিশীল ও সমৃদ্ধ করতে আরেকবার সুযোগ দিন। আপনাদের বিবেচনায় আমি যোগ্য হলে ভোট প্রার্থনা করছি। মনে করি, আমি আবারো মূল্যায়িত হবো।

তোফায়েল আহমেদের নির্বাচনী ইশতেহার:
১ টুয়াকের সরকারি নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পাদন করা।
২। টুয়াকের ব্যয় নির্বাহ ও উন্নতি এবং সমৃদ্ধির জন্য চলমান আয়ের উৎস নিশ্চিত করা
৩।প্রত্যেক সদস্যের জন্য দুরারোগ্য/দুর্ঘটনা ইত্যাদির অসুস্থতাকালিন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৪। টুয়াকের কোন সদস্যের অকাল মৃত্যু হলে তার পরিবারকে এককালিক একটি অঙ্কের অনুদান প্রদান করা এবং মৃত সদস্যের পরিবারে কর্মযোগ্য বেকার মানুষ থাকলে পর্যটনখাতে তার চাকুরি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৫।দ্রুত টুয়াকের নিজস্ব জমি রেড়ি করা, সেখানে অফিস এবং টুয়াক ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা।
৬।পর্যটন খাতে সরকার সরকার কর্তৃক ব্যয়কৃত সুযোগ-সুবিধা আদায় করে পর্যটনের বন্ধ মৌসুমে সদস্যদের ট্রেনিং চালুর মাধ্যমে ভাতা প্রদান করে জীবন ও জীবিকার উন্নতি সাধন করা।
৭। পরিবেশ বান্ধব পর্যটন নগরী হিসাবে কক্সবাজারকে গড়ে তোলতে জোরালে ভুমিকা রাখা।
৮।নতুন নতুন পর্যটন স্পট বিকাশে টুয়াকের নেতৃত্ব নিশ্চিত করা।
৯।প্রত্যেক জাহাজ, হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস, রিসোর্ট এবং বিনোদনকেন্দ্রে টুয়াক সদস্যদের সর্বোচ্চ কমিশন, সুযোগ সুবিধা এবং সম্মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১০।সরকারি অনুদানে নির্মাণাধীন সাবরাং বিচ, নাফ ইকো ট্যুরিজম, সোনাদিয়া বীচ ইত্যাদি প্রকল্পে টুয়াকের প্রতিনিধিত্ব, কাজ করার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
১১।পর্যটন ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেকোন পদক্ষেপ রুখে দিতে সদা তৎপর ভূমিকা রাখা।
১২।টুয়াকের আর্থিক বিবরণী, গণতান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অক্ষুণ্ণ রাখা।
১৩।নির্বাচিত পরিচালনা পরিষদের মাসিক বৈঠক এবং সাধারণ সদস্যদের নিয়ে ত্রৈমাসিক সাধারণ সভা বাধ্যতামূলক করে সংগঠন গতিশীল রাখা।
১৪।সদস্যদের নিয়ে বার্ষিক কান্ট্রি ট্যুরের আয়োজন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল টুরিস্ট স্পট সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান আহরণ করানো এবং ধীরে ধীরে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পট ভিজিট করার প্রক্রিয়া চালু করা।
১৫।কোন সদস্য বিপদগ্রস্ত হয়ে জরুরি অর্থের প্রয়োজন হলে টুয়াকের তহবিল থেকে সর্বসম্মতিক্রমে শর্ত সাপেক্ষে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করা।

নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ ও সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন টুয়াক সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।

সুন্দর ইশতেহার উপস্থাপনের জন্য তোফায়েল আহমেদকে সবাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে টুয়াকের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান এম এ হাসিব বাদল বলেন, তোফায়েল আহমেদকে শুধু আমি চিনিনা; আপনারাও জানেন, চেনেন। তিনি টুয়াককে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসেন। সংগঠন ও সদস্যদের জন্য লেগে থাকেন। তাকে সবসময় পাওয়া যায়। টুয়াকের মতো অলাভজনক সংগঠন পরিচালনায় তোফায়েলের মতো নেতৃত্ব দরকার।

প্রধান উপদেষ্টা ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান মুফিজ বলেন, তোফায়েল আহমদ একজন কর্মীবান্ধব মানুষ। কর্ম ও কর্মীকেই ভালোবাসেন তিনি। গতিশীল নেতৃত্বের জন্য তোফায়েল আহমেদ উপযুক্ত প্রার্থী।

অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল বেশ উপভোগ্য। সবশেষে সবাইকে রাতের খাবারের নিমন্ত্রণ করেন সভাপতি প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ।