শাহীন মাহমুদ রাসেল:
কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় জন্ডিসে দু’টি কিডনিসহ লিভার অচল হয়ে যাওয়া দিনমজুর মুবিনের চিকিৎসায় পাশে দাঁড়ালেন সামাজিক সংগঠন অসহায় মানুষের খোঁজে (অমাঁখো)।
শনিবার (১৪ আগষ্ট) বিকেল ৩ টার দিকে চিকিৎসার জন্য মুবিনের বোন সাবিনা ইয়াসমিনের হাতে অমাঁখোর নেতাকর্মীরা ২০ হাজার নগদ টাকা তুলে দেন।
এসময় সময় উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক এম শরিয়ত উল্লাহ, উপদেষ্টা মাওনালা আজিজুল হক, উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য হাসান মুরাদ, উপদেষ্টা ও পরামর্শক নাছির উদ্দিন, আমিন উল্লাহ, কার্যকরী সিনিয়র সদস্য সাইফুল ইসলাম ও কক্সবাজার জেলার সেচ্ছাসেবী সংগঠন সূর্যের হাসি যুব সংঘ’র প্রতিনিধিসহ কার্যকরী সদস্যবৃন্দ।
৮ আগষ্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘এতিম মুবিনের জীবন প্রদীপ নিভু নিভু : আসুন, পাশে দাঁড়াই’ শিরোনামে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
মুবিন কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া কোনারপাড়া গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে। তিন বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে দিনমজুরের কাজ করে ৩ বোনসহ ছয় সদস্যের পরিবারের হাল ধরেছেন এই স্বপ্নবালক। কিন্তু কয়েক মাস ধরে সে বাড়ির বিছানায় শুয়ে আছে। লিভার জন্ডিসে তার লিভারসহ দু’টি কিডনিসহ অচল অচল হয়ে পড়েছে। এরপর থেকে শয্যাশায়ী জীবন কাটাচ্ছে সে। চিকিৎসকের মতে, জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম গিয়ে চিকিৎসা করা না হলে যে কোনো সময় নিভে যেতে পারে মুবিনের সম্ভাবনায় সুন্দর জীবনপ্রদীপ। ধূসর হয়ে যেতে পারে তার স্বপ্ন, সাধ এবং ভালোবাসা; মুছে যেতে পারে চিরচেনা প্রিয়মুখ ‘মুবিন’। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা। কিন্তু টাকার অভাবে মুবিনের চিকিৎসা আটকে গেছে।
এদিকে এই এতিম মুবিনকে বাঁচাতে আর্থিক সহযোগিতার আশায় সমাজের মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিচ্ছেন মা লায়লা বেগম। গত ১১ আগষ্ট বিকেলে ঝিলংজার ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা অর্থসহায়তা দেন।
এরপর থেকে মুবিনের পাশে দাড়াতে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন অমাঁখো। দিয়েছেন ২০ হাজার নগদ টাকা। নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং মহৎ উদ্যোগ কিন্তু এই সীমিত টাকা দিয়ে কি মেটানো সম্ভব হবে মুবিনের চিকিৎসা? নিজগ্রামবাসী ও স্থানীয় ছেলেদের উদ্যোগে তার চিকিৎসার্থে কিছু টাকা সংগ্রহ করে বর্তমানে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসের শুরু থেকে মুবিনের শরীরে প্রথম ব্যথা শুরু হয়। পরদিন তার মা তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার কোনো উন্নতি না হলে ১৩ মার্চ তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুবিনকে কক্সবাজারের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক এবং হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষায় মুবিনের লিভার জন্ডিস এবং দুটি কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। এরপর লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তফা নূর মহসীন, ডা. ইয়াসিন আরাফাত, বাতজ্বর বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ দে ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অনুপম বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মতে, ঢাকা-চট্রগ্রাম গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো সে বেঁচে ফিরতে পারে। প্রয়োজন অনেক টাকা।
অমাঁখোর সাধারণ সম্পক শরিয়ত উল্লাহ বলেন, মুবিনের চিকিৎসার সাহার্য্যার্থে তহবিল সংগ্রহের জন্য অমাঁখোর সদস্য এবং দেশ-বিদেশে সবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে চিকিৎসা শুরুর জন্য আপাতত ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। সামনে আরও তহবিল গঠন করে তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।
মুবিনকে সহযোগিতার জন্য তার পরিবারের একটি নম্বরে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছে। নম্বরটি হলো ০১৬৪৩৮২৩০৬২, কেউ চাইলে বিকাশের মাধ্যমে মুবিনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন। মুবিনের মা লায়লা বেগমের ব্যক্তিগত নম্বরটি হলো ০১৮৭৪২৭৩১৩৩।