আলমগীর মানিক, রাঙামাটি
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠির কল্যাণের জন্যেই পার্বত্য শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ের আকাশে শান্তির পারাবত উড়িয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রোববার রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত জুম মিটিংয়ে বক্তব্য প্রদানকালে সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, গত বারো বছর আগে পাহাড়ের যেসকল রাস্তায় স্থানীয়রা ধানের চাষ করতো সেখানে এখন সুবিশাল প্রসস্থ রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। পার্বত্যবাসীর সার্বিক জীবনমান্নোয়নে বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিকদলগুলোর সমালোচনা করে বলেন, পাহাড়ের শান্তিপূর্ন পরিবেশকে বিনষ্ট করতে এখানে একটি মহল ভাতৃঘাতি সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত থেকে এখানকার জনজীবনকে অতিষ্ট্য করে তুলছে। এই অপশক্তির ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র তৎপরতার বিরুদ্ধে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবানও জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ১২ বছর আগে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার অবস্থা কেমন ছিলো। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার রাস্তার পাশে মানুষ ধান রোপণ করছে। ১২ বছর পর এই তিন পার্বত্য জেলায় কেমন উন্নয়ন হয়েছে। বান্দরবান এবং রাঙামাটির সীমান্ত সড়কের কাজ চলছে। রাঙামাটিতে অনেক গুলো বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কিছু সমস্যা রয়েছে সেগুলো অচিরেই দূর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পাহাড়ের আনাচে-কানাচে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে সোলার প্যানেল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটি মহল পাহাড়ের উন্নয়নে বাঁধা দিয়ে যাচ্ছে। তারা অতীতেও এ উন্নয়ন চায়নি।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, করোনার কারণে সম্মেলন বন্ধ ছিল। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে আপনারা চলতি আগষ্ট মাসের পরপরই সম্মেলনের প্রস্তুতি নিন। আপনারা আগে উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ করবেন।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে জুম মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন ৩৯৯ আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বরের সঞ্চালনায় এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি -পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমীন, দপ্তর সম্পাদক রফিক আহম্মেদ তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মমতাজ উদ্দীনসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উক্ত জুমমিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। মিটিংয়ে ঢাকা থেকে অংশগ্রহণ করে উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান শেষে ওবায়দুল কাদের অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে অংশ নিতে হবে এমন মন্তব্য করে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতাদের সাথে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে দুই ঘন্টাব্যাপী সাংগঠনিক আলোচনায় মিলিত হন।