ইমাম খাইর, সিবিএন:
গত ২৬ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কক্সবাজার জেলায় আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৩২ কোটি ৫০লক্ষ ২৯ হাজার ৫৯২ টাকা।
মোট ৭১টি ইউনিয়নের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫১টি। সেখানে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ২৪টি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ৭২৩.১৭৮ বর্গ কি.মি।
পাহাড়/ঘরের দেয়াল ধসে/পানিতে ডুবে মারা গেছে ১৪ জন। পাহাড় ধসে আহত হয়েছে ১০ জন।
বৃহস্পতিবার (১২ আগষ্ট) জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস এসব তথ্য দিয়েছে।
তাদের তথ্য মতে, ৩২,৭৩৭ টি খানা, ২৪টি ব্রীজ/ কালভার্ট, ২০৩.১৮ কি.মি. রাস্তা, ১৫.৮ কি.মি. বাঁধ, ১০ হাজার ২২২ টি বাড়ি, ভেসে গেছে ৯৯ টি গবাদি পশু, হাস ও মুরগি ভেসে গেছে ২৬,৩৪৭ টি, ৭,৩৫৭ হেক্টর শস্যক্ষেত/বীজতলা, ৫,৪৯৫ হেক্টর মৎস্য ঘের, ০.১ কিমি বিদ্যুৎ লাইন, ৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০৭১ টি নলকুপ এবং ৬৭২৪ টি লেট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে জানান, বন্যায় দুর্গতদের ৩০০ মেট্রিক টন চাল, ২৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং পাহাড় ধসে মারা যাওয়াদের জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে সরকারি সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ৩৩৩-তে কলকারীদের যাচাই বাছাইপূর্বক খাদ্য সহায়তা দিতে প্রায় এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সরকারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে আইএনজিও এবং এনজিওগুলো বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা দিচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বন্যায় কক্সবাজার জেলায় ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এমন ঘরবাড়ি রয়েছে যেখানে কোনদিন পানি ওঠার কল্পনাও কেউ করে নি। চকরিয়ার মাতামুহুরী ও কক্সবাজারের বাঁকখালী তীরবর্তী এরকম কিছু ঘরবাড়ি চোখে পড়েছে। ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে গ্রামীন সড়ক।
ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী, ইসলামপুর, ঈদগাঁও, জালালাবাদ, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার বাংলাবাজার, মুক্তারকুল, খরুলিয়া, চাঁন্দের পাড়া, মুহুরীপাড়া, এসএমপাড়া, পিএমখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া, ঘাটকুলিয়াপাড়া, পাতলি, মুহসিনিয়াপাড়া, ধাওনখালী, খুরুশকুলের তেতৈয়া, ভারুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল, রামুর ফতেখারকুল, রাজারকুল, মিঠাছড়ি, চাকমারকুল, জোয়ারিয়ানালা, কাউয়ারখোপ, রশিদ নগর, চকরিয়া পৌরসভা, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, হারবাং, লক্ষ্যারচর, ফাঁসিয়াখালী, বমুবিল ছড়ি, চিরিংগা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, বিএম চর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, বদরখালী, কোনাখালী, সাহারবিল ও বরইতলী, পেকুয়ার মগনামাসহ প্রায় নিম্নাঞ্চল, উখিয়ার পালংখালী, রাজাপালং, টেকনাফের সেন্টমার্টিন, হ্নীলা, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংসহ বিভিন্ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতির খবর রয়েছে।
এবারের টানা বর্ষণে দ্বীপাঞ্চাল মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার প্রায় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বসতবাড়ি ও ক্ষেতখামার। এখানকার বাসিন্দাদের দুর্দিন যেন লেগেই আছে। টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠা যেন স্বপ্ন তাদের। জলবায়ুর প্রভাবে সাগরে বিলীনের আশংকা করা হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ।