বিশেষ প্রতিবেদক
করোনার মহামারি ও অতিবৃষ্টিতে আবারো কক্সবাজার শহরে বেড়েছে চুরির ঘটনা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩দফা চুরির সংঘটিত হয়েছে শহরের রুমালিয়ারছড়াস্থ হাশেমিয়া মাদ্রাসার মার্কেটে। এসব লাগাতার চুরির ঘটনায় দোকানদাররা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। চুর নির্মূলে কক্সবাজার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও পাশের ব্রিজেটি ঘিরে চুরি, ছিনতাই ও খুনের মতো ঘটনাও ঘটেছিলো। তবে পুলিশি তৎপরতায় মাঝখানে কমে গেলেও বর্তমানে এ এলাকায় পুলিশি নজরদারি ভাটা পড়ায় আবারও বেড়েছে চোর ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য। অনেকটাই পুলিশ যেন বার বার চোরের কাছে পরাস্ত হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মুন্না বলেন, “৮ তারিখ দিবাগত রাতে প্রতিদিনের ন্যায় আমি দোকানে তালা দিয়ে বাড়িতে চলে আসি। কিন্তু সকালে খবর আসে আমার দোকানের গ্রীলের তালা ভাঙ্গা। পরে আমি গিয়ে দেখি হাজার হাজার টাকার মালামাল ও ড্রয়ার ভেঙে লূটে নিলো নগট টাকা। এতে আমি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

পাশের আরেক দোকানী আমান উল্লাহ বলেন, ‘আমিও রাতে দোকান বন্ধ করে চলে আসি। পরে সকালে গিয়ে দেখি গ্রীলের তালা কেটে মালামাল ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। পূর্বের চুরির রের্কড আছে এরকম বহিরাগত আরমান, বাবুসহ কয়েকজনকে জিঙ্গেসা করা হলে এগুলো নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি তারা আমাদের উল্টো চুরিকাঘাত করে জানে শেষ করে দেওয়ার হুমকি ধুমকি দেয় এবং গালাগালি করে। এছাড়া রাতে যাওয়ার সময় অপ্রিতিকর ঘটার হুমকার দিয়ে চলে যায়।

স্থানীয় পুরাতন ব্যবসায়ী রমজান সওদাগর বলেন, ‘আজ আাম প্রায় ৩০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি এলাকায়। কিন্তু এ ধরনের চুরি সংঘটিত হওয়া আমি কখনও দেখিনি। গত এক সপ্তাহ পূর্বে আমার দোকানের তালা ভেঙে ল্যাপটপ, অন্যান্য মালামালসহ বিকাশের প্রায় নগদ ৫০ হাজার টাকা লুটে নিয়ে যায়। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা অত্যান্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এসব চুরি বিষয়ে থানা পুলিশকে অনেকবার অবগত করেছি কিন্তু কোন সূরহা পাচ্ছি না। আর এই এলাকায় রাতে পুলিশের টহল নেই। তাই এসব চুরি সংঘটিত হচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করার জন্য কক্সবাজার পুলিশ সুপারের হস্থক্ষেপ কামনা করছি।

পুরাতন পিটিআইস্থ মুফিজ নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, গত ৫ দিন আগে আমার দোকানেও চুরি সংঘটিত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাইট গার্ডসহ স্থানীয়রা জনান, বাবু, আরমান, শহিদুল্লাহ সুলতান এবং লিটনসহ বিশাল একটি চুর ও ছিনতাইকারি সিন্ডিকেট রয়েছে এ এলাকায়। তাদের অনেকেই মাদকাসক্ত। তারা প্রতিনিয়ত এ পিটিআই বাজার ও ব্রিজের আশপাশে দোকান ও ঘরবাড়িতে চুরি ছিনতাই সংঘঠিত করে থাকে। এর আগেও তাদের সদস্য পুলিশের হাতে ধৃত হয়ে হাজত খাটে। পুলিশ তৎপর হলে তাঁরা আইনের জালে আটকা পড়বে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা বলছেন, উপরে উল্লেখিতরাসহ কিছু মাদকাসক্ত মিলে এ চুরি সংঙ্গিত করেছে। মাদকাসক্ত চোরের এসব চোরের নজর মোবালিসহ ছোটোখাটো জিনিসের দিকে। আর সংঘবন্ধ একটি চোরচক্রের নজর মোটরসাইকেল, দোকানপাটসহ ভারী জিনিসের দিকে। তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টিন, ক্লপসিবল গেটসহ সাটারের তালা, বাসা বাড়ির তালা গ্রীল ভেঙ্গে চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন এ এলাকার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।
এজন্য তাঁরা আজ দোকানদারেরা সবাই একটি মিটিং এর ডাক দিয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ঘটনার পরপরই দোকানগুলো পরিদর্শন করেছি। এসব চোরদের ডাটা তৈরী করা হচ্ছে এবং তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশি জোর তৎপরতা চলছে।’
এ বিষয়ে কক্সবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, ‘হাশেমিয়া মাদ্রাসার মার্কেটে দোকান চুরির হওয়ার খবর পেয়েছি। এসব চোরদের ধৃত করতে কাজ করছে পুলিশ। তাছাড়া প্রয়োজনে আমরা মামলা নেব”