এফ এম সুমন পেকুয়াঃ
সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাস কোভিট ১৯ এ বিপর্যস্ত তখনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকার উপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। টিকার আওতায় আনতে সারা বিশ্বের নিজ নিজ দেশের সরকার গুলো কাজ করছে। আমাদের বাংলাদেশ ও তার পিছিয়ে নয় কয়েক ধাপে মানুষকে টিকার আওতায় আনতে কাজ করছেন সরকার ।

প্রথম দফায় সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের টিকার আওতায় আনা হয়েছিল। এখন গণটিকার মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে আজ গণটিকা উদ্বোধন করা হয়েছে।

সাধারণ মানুষকে এই টিকা’র আওতায় আনতে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি তার নিজ উদ্যোগে ৮০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছেন। তারা নিজেরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে টিকার রেজিস্ট্রেশন করে দিচ্ছেন এবং কি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিয়ে টিকার হার্ডকপি নিজেরাই প্রিন্ট করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরবরাহ করছেন।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে তারা বিকেল ৫টা পর্যন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব সেবা দেন। এই ছাড়াও তাদের রয়েছে একটি সার্বক্ষণিক স্ট্রাইকিং টিম যারা দ্রুত মটরসাইকেল যোগে যেকোন কাগজ পৌছে দিবেন। আবার তাদেরকে তদারকি করছেন চেয়ারম্যান নিজেই। দুপুরে সকলে তাদের ভোজন সেরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মিলিত হয় এবং তাদের আপডেটগুলো চেয়ারম্যানকে জানান। চেয়ারম্যান তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।

সরজমিনে মগনামা শরতঘোনা এলাকায় গিয়ে কথা হয় গৃহীনী হাসিনা বেগমের সঙ্গে তিনি বলেন, কিছু শিক্ষিত যুবক ও কিছু এনজিও কর্মী এসে আমাদের বাড়িতে আমাদের টিকা নিতে অনুরোধ জানান এবং আমাদের রেজিষ্ট্রেশন ফ্রিতে করে দেন ফলে তিনি টিকা নিতে পেরেছেন বলে জানান।

তিনি ছাড়াও কথা হয় স্থানীয় যুবক আব্দু রশীদের সঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয় কেননা আমাদের বাড়ি বা আশেপাশের বাড়ির মুরব্বিরা কমপিউটারের দোকানে গিয়ে টিকার রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব নয় কিন্তু আজ বাড়িতে এসে করে দিয়েছেন এটা আমাদের সুভাগ্য।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় টিমের সেচ্ছাসেবক রুবেলের সঙ্গে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের উদ্যোগে আমরা এই কাজটি করছি মানুষ প্রচুর রেসপন্স দিচ্ছে যেটা আমরা আশা করিনি। কাজটি করে আনন্দ পাচ্ছি কেননা মানুষ সহজেই টিকা নিবে ফলে আমরা একসময় করোনা টেনশন মুক্ত হবো। তবে তিনি রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে সার্ভার জনিত সমস্যার কারনে বেশ সমস্যায় পড়েছেন বলে ও জানান।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মগনামার চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় কেননা গ্রামীণ পর্যায়ে মানুষকে টিকার আওতায় আনা খুব জরুরি কেউ কেউ নানান অযুহাতে টিকা নিতে ভয় পায় কিন্তু চেয়ারম্যান বাড়ি বাড়ি গিয়ে এভাবে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিলে সকল মানুষ টিকার আওতায় আসবে এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ বলে তিনি দাবি করেন। তবে সার্ভার সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন,একসঙ্গে সারা দেশের মানুষ নিবন্ধন করায় সার্ভার একটু ডাউন হচ্ছে তবে দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান।

মাঠ পর্যায়ে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়া ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, আমি এলাকার শিক্ষিত যুবক, ছাত্রছাত্রী এনজিও কর্মীসহ সকলকে নিয়ে টিকা দেয়া সহজ করতে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিতে মানুষকে সাহায্য করছি। আমরা চাই মগনামা সহ দেশের সকল মানুষ টিকা নিক সুস্থ থাকুক।

তিনি আরো বলেন, আমার উদ্দেশ্যে হলো আমার প্রাণ প্রিয় ছাত্রছাত্রী বন্ধুরা এসময় ভালো একটি সময় পার করলো এবং তাদের মাধ্যমে এলাকার মানুষের উপকারও হলো । তিনি বেশ রেসপন্স পাচ্ছেন বলে জানান এবং এটি পুরো ইউনিয়নের অব্যাহত থাকবে বলেও নিশ্চিত করেন। এর ফলে সর্বশেষ প্রথম দিন ৬০০ মানুষকে টিকার আওতায় আনা গেছে। মানুষ ঝামেলা ছাড়াই উতসাহ নিয়ে টিকা গ্রহণ করেছে।