মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বাকখালী নদী গর্ভে ১৪ টি বসত ঘর বিলীন হয়েছে। আরও শতাধিক পরিবার এখন বিলীন হওয়ার পথে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাকি বসত ঘর ও যে কোনো মুহুর্তে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে জানালেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ,উপজেলার রামু গর্জনিয়া ইউনিয়নের পুর্ব বোমাংখিল ৭ নং ওয়ার্ড এলাকায় বাকখালী নদীর ভয়াল গ্রাসে ১৪ টি বসতঘর পাকা, সেমিপাকা, বাশ ও কাঠের তৈরি সম্পুর্ন বিধস্ত হয়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিধস্ত বাড়ীর সদস্য তানজিদ রায়হান, আমেনা বেগম, সাবেকুন্নাহার, মফিজ আলম, রুকেয়া বেগম, মোঃ মাঝি, আবুল কাসেম, আবু তাহের, হিন্দু পাড়ার খোকন শর্মা সহ অনেকে বাড়ী ঘর হারিয়ে নির্বাক হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের নিরব কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এখন বাড়ী ঘর হারিয়ে মাথা গোজার ঠাই নেই। তারা জানান প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ি ঢল চোখের সামনেই সব কিছু নিয়ে গেল। কোন কিছু বুঝার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। কোন কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি

সরজমিনে আরো দেখা যায় ৬ নং ওয়ার্ড বেলতলী মাওঃ জাফরের বাড়ী সহ আশপাশের বাড়ী ও বিলীন হওয়ার পথে।
তাছাড়া একই ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড ক্যাজাইর বিল গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান বিলীন হওয়ার পথে। যে কোন মুহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এসব প্রতিষ্ঠান রক্ষার দাবীতে সংকারের হস্তক্ষেপ
চায়। পাশাপাশি ক্ষত বিক্ষত হয় বিভিন্ন সড়ক পথ।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকা পরিদর্শন করেছেন রামু, কক্সবাজার সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শান্তনা দেন। আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার। একথা গুলু জানালেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ নজরুল ইসলাম।
ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ সভাপতি মোঃ ইউছুফ জানান দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাকী শতাধিক পরিবার ও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া পরিবার গুলু এখন অসহায় হয়ে মানবতার জীবন যাপন করছে।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন মাননীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি মহোদয় ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলা প্রশাসক মহোদয়কে তাৎক্ষণিক অবহিত করেছেন। এছাড়াও ক্ষতি গ্রস্ত পরিবার গুলুর জন্য নগদ টাকা, আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চেয়ারম্যান আরো বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে বাকি শতাধিক পরিবার বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত এক সপ্তাহ টানা বর্ষনে রাস্তা ঘাট বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার মানুষের। তাছাড়া নাইক্ষংছড়ি উপজেলার দোছড়ি সীমান্ত সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে গাড়ি যোগাযোগ। ১১ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শাহ আবদুল আজিজ আহমদ ও দোছড়ি সীমান্ত সড়ক নারিকেল বাগান এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি সড়কের নারিকেল বাগান এলাকায় রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় সীমান্তের ৬ টি বিওপির সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।