খালেদ হোসেন টাপু,রামু :
টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে বুধবার সকাল থেকে রামু বাঁকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে। ফলে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্মঞ্চল এবং জন গুরুত্বপূর্ণ ৪টি সড়কসহ বন্যার পানি তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব এলাকার বাড়ি-ঘর ও গ্রামীণ রাস্তা ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ দুর্গত এলাকা দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। বাড়ি ঘরে পানি ওঠায় নিরাপদ আশ্রয় স্থান খুঁজছে ভানবাসী মানুষরা।
জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রামু ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক, রামু মরিচ্যা আরাকান সড়ক, রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক ও টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের রামু চেইন্দা নামকস্থানে বন্যার পানি তলিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও রামু সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রামুর কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, কাউয়ারখোপ, ঈদগড়, রাজারকুল, চাকমারকুল ও দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের কয়েক হাজার বাড়ি অন্তত পাঁচ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাইল নোমান জানিয়েছেন-ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম এখন পানিতে একাকার হয়ে গেছে। এসব গ্রামের ৫০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান জানিয়েছেন-ইউনিয়নের ধরপাড়া, হালদারকুল সহ কয়েকটি গ্রামে শতাধিক বসত ঘর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বাঁকখালী নদীর শিকলঘাট-পূর্ব রাজাকুল সংযোগ সড়কস্থলে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। জরুরী ভিত্তিতে এখানে সংস্কার না হলে পুরো সড়কটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন নিকাহ রেজিষ্ট্রার কাজী এম আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন-ইউনিয়নের ফরেষ্ট অফিস এলাকা পানিতে প্লাবিত হওয়ায় রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম মনিরঝিল, পূর্ব কাউয়ারখোপ, বৈলতলী, চরপাড়া সহ কয়েকটি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়ায় এসব এলাকার লোকজন চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ ভূট্টো জানান-ইউনিয়নের সিকদারপাড়া, চরপাড়া, উমখালী গ্রামে ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৩ ওয়ার্ডের উমখালীতে বাঁকখালী নদীর ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়ায় লোকজন আতংকে রয়েছে। তবে ভাঙ্গন রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ চলছে।
চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছৈয়দ নুর জানিয়েছেন-পশ্চিম চাকমারকুল এলাকায় বাঁকখালী নদীর পানি আকষ্মিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু তালেব জানিয়েছেন-গ্রামের ১২টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন-গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে পানিবন্দী লোকজনকে উদ্ধারের পাশাপাশি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।