নীতিশ বড়ুয়া:
কক্সবাজার জেলায় আরো একটি উপজেলার অনুমোদন হলো। সেটির নাম ঈদগাঁও উপজেলা। এ নিয়ে কক্সবাজারে এখন ৯টি উপজেলা। কক্সবাজার সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে ‘ঈদগাঁও উপজেলা’ অনুমোদন পাওয়ায় কক্সবাজার-৩(সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এর আরো একটি স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন হলো।
সোমবার (২৬ জুলাই) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)’র সভায় ঈদগাঁও উপজেলা অনুমোদন দেওয়া হয়। ঈদগাঁও উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন হচ্ছে, ঈদগাঁও, ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ ও পোকখালী।
এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেছেন, র্দীঘ পঞ্চাশ বছর ধরে কক্সবাজার সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঈদগাঁও উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ অবহেলিত ছিল। শুধু ঈদগাঁওকে উপজেলা করতে পারিনি বলেই আমরা সেখানে কোন সরকারি হাসপাতাল করতে পারিনি। কোন উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজকে সরকারি করতে পারিনি। ফায়ার ষ্টেশন স্থাপন করতে পারিনি বলেই প্রতি বছর ঈদগাঁহ বাজার, ফকিরা বাজার, মুসলিম বাজার, পালাকাটাসহ এ এলাকার অসংখ্য ঘরবাড়িগুলো আগুনে পুড়তে দেখেছি।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সেই ২০১৪ সাল থেকে সংসদে যতবার বক্তব্য রেখেছি, ততবার আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে মাননীয় স্পীকারের কাছে ঈদগাঁওকে উপজেলায় উন্নিত করনের জোরালো দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। সংসদ সদস্য নির্বাচন ২০১৮ এর আগে ঈদগাঁও হাইস্কুল ময়দানে হাজার হাজার জনতার সামনে দু’হাত তুলে কথা দিয়েছিলাম, যদি ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তর করতে না পারি, আর কোনদিন আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসবোনা। এর পরে ২০১৯ সালে ঈদগাঁহ এলাকার নেতাদের সাথে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তরের দাবীটুকু আমরা আবারো উপস্থাপন করেছিলাম। সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে সম্মতিসূচক ইতিবাচক কথা জানিয়েছিলেন। এরপরে লিখিত আবেদন জানিয়ে ছিলাম, সেই লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তরের অনুমোদন দিয়েছেন। ঈদগাঁওর পঞ্চাশ বছর ধরে অবহেলিত মানুষ তথা কক্সবাজারবাসির পক্ষ থেকে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজ কক্সবাজারবাসির জন্যে দারুন সুখবর। র্দীঘ পঞ্চাশ বছর ধরে ঈদগাঁও’র তিন লক্ষাধিক অবহেলিত মানুয়ের স্বপ্ন ছিলো ঈদগাঁহকে উপজেলায় বাস্তবায়নের। উপজেলা ছিলনা বলেই ঈদগাঁও এলাকার কৃষকরা সার, বীজ সংগ্রহসহ সরকারি প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার জন্য দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার দুরে যেতে হতো।
ঈদগাঁও উপজেলা এখন আর স্বপ্ন নয়, এখন বাস্তবতা। এটা বাস্তবায়নে যারা আন্তরিক ভাবে সহযোগীতা ও কষ্ট করেছেন আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ঈদগাঁও এখন হয়ে যাবে বাংলাদেশের অন্যতম উপজেলা শহর। এখানকার লবনচাষিদের সুবিধার্থে ঈদগাঁও হবে লবনের হেড কোয়ার্টার। পূর্ব ঘোষনা মতে ঈদগাঁওকে বানিজ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, সম্প্রতি আমি যখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিলাম। তখনও আমি বলেছিলাম, আমার কয়েকটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন রয়ে গেছে। জানিনা এ স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবো কিনা। আমার প্রথম স্বপ্ন ছিলো- ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তর করা। আজ তা অনুমোদন হলো। কক্সবাজার শহরে শতকোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বনন্দিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ, কক্সবাজারে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কক্সবাজার পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নিত করণ, রামুতে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ স্বপ্ন সমুহ বাস্তবায়নেও এমপি কমল সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত ঈদগাঁহ উপজেলাবাসিকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।