তোফায়েল আহমদ

বহুদিন পর পাওয়া গেল আরেকটা। করোনায় মানুষ এমনিতেই ভয় আর আতংকের মধ্যে এক অসহনীয় অবস্থায় রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরদের মত একজনকে পাওয়াও কম ভাগ্যের ব্যাপার নয়।
অন্তত ক্ষনিকের জন্য মানুষ হাসতে পারল, আফসোস করতে পারল, ছবিগুলো দেখে অবাক হওয়া গেল সেই সাথে রাজনীতি কোথায় গেল সেই আলোচনাও নতুন করে করতে পারল।
এরশাদ সাহেবের মরিয়ম মমতাজের কাহিনী কত লুকিয়ে পড়তাম আমরা। সেই সময় এসব রংগিলা নারীদের নিয়ে অন্তত কিছুটা লুকিয়ে দেখা হলেও ছিল। এরশাদ সাহেবের আরো কত লেডির কথা বলাবলি হত কানে কানে।
কিন্তু এখন হেলেনা জাহাঙ্গীররা কোন লুকোচুরির জিনিস নয়। তারা বরং যতই প্রচারণা বেশী পায় ততই সাকসেস মনে করে নিজেদের। এ হেলেনা নাকি ফ্রীল্যান্স সাংবাদিকও। তার কাছে সচিবালয়ে ঢুকার কার্ড ও আছে।
আমার বাবা টা মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন। ছিলেন আপাদমস্তক আওয়ামী লীগের অন্ধ সমর্থক। বংগবন্ধুকে ভালবাসতেন অন্যরকমের ভালবাসা দিয়ে। কত রোজা রেখেছেন প্রয়াত নেতার জন্য। বংগবন্ধু হত্যার রায় দেখার জন্য আল্লাহর কাছে কত ফরিয়াদ করেছেন।
অন্তত আজ হেলেনা জাহাঙ্গীরদের আমলে আমার বাবাটা জীবিত নেই। মহান রাব্বুল আলামিন তার আগেই বাবা কে নিয়ে গেছেন। এসব হেলেনা জাহাঙ্গীররা আওয়ামী লীগের কর্মী হবার কথা যদি আজ আমার বাবা জানতেন, তাহলে নিশ্চিত বাবাকে কারাগারে যেতে হত।
কারণ আমার বাবা প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। তাও জাতির জনকের দল আওয়ামী লীগে যদি এসব মহিলাদের কথা শুনতেন তিনি প্রতিবাদে ফেটে পড়তেন। যাক আল্লাহ রক্ষা করেছেন।
ছবিগুলো দেখে আমি অবাক হই। যে হেলেনা এরশাদের দল খেয়েছে, খেয়েছে জেনারেল জিয়ার দল সেই হেলেনা কিভাবে আওয়ামী লীগের মত রাজনৈতিক দলে স্হান পায়।
হে আওয়ামী লীগ, তোমাকে বলার কিছুই নেই। তোমার জন্য লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। সেই বায়ান্নর শহীদ রফিক জব্বার থেকে শুরু করে একুশে আগষ্ট পর্যন্ত হিসাব করলে দলটি তার ভক্তদের রক্তের ঋণ শোধ করতে পারবে?
দল বিক্রি করে ধন দৌলত আর ক্ষমতাশালী হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বলতে গেলে বেশি নয়। তার চেয়েও কয়েকশ গুণ বেশি হচ্ছে দেশের আনাচে কানাচে ঐতিহ্যবাহী এ দলটির জন্য মরিয়া নীরিহ ভক্তের সংখ্যা। আওয়ামী লীগ কি এসব হেলেনা জাহাঙ্গীরদের রাখবে নাকি রাতের বেলার খাবার চালগুলো বিক্রি করে নৌকা মার্কার জনসভায় যোগদানকারী মানুষ গুলোর কথা ভাববে ?
বিনীত প্রশ্ন রইল – জাতির জনকের কন্যা এবং বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কাছে।

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, কালেরকন্ঠ