মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়ার চাঞ্চল্যকর কাঠ ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন মোক্তার হত্যার প্রধান আসামি মোঃ রাসেল (৩৪) কে গ্রেপ্তার করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দিবাগত-রাত দেড়টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মোঃ রাসেল লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী লাইল্যারমার পাড়া এলাকার হেলাল উদ্দিনের পুত্র।
তিন বছর আগে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির আলীক্ষং এলাকায় হত্যাকান্ডের একসপ্তাহ পর হেলাল উদ্দিন মোক্তারের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মোক্তার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ৫নং ওয়ার্ড পশ্চিম মাইজ পাড়া এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে।
ঘটনা সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আলীক্ষং গভীর জঙ্গল থেকে মোক্তারের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে বাইশারী ফাঁড়ি পুলিশ। তার একসপ্তাহ আগে তার ব্যবসায়ীক কাজে নাইক্ষ্যংছড়ির আলীক্ষং এলাকায় যান মোক্তার। সেখানে তিনি প্রায় একযুগ ধরে কাঠের ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তারিখ নিজ কর্মস্থলে গিয়ে তিনি আর ফিরেন নি। ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটিও এসময় বন্ধ পাওয়া যায়। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর মোস্তারের বড়ভাই কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নাইক্ষ্যছড়ি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি ডায়েরি করেন।
এতে উল্লেখ রয়েছে, নিখোঁজের পর ০১৮৫৭ ৫৮১৫৪০ নাম্বার ফোনে মোক্তারের স্বজনদের থেকে দেড় লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। পরে ১৪ ডিসেম্বর তাদের দেওয়া ০১৭৮২ ৪১০২৫২ নাম্বারে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার টাকা বিকাশ করেন। কিন্তু ওসময় ফোন দাতারা মোক্তারের সাথে কোনপ্রকার কথা বলিয়ে দিতে পারেনি। পরক্ষণে নাম্বারগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
১৯ ডিসেম্বর বিকেলে স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে, তার অর্ধ গলিত লাশ আলীক্ষং জঙ্গলের কিনার থেকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার আওতাধীন বাইশারী তদন্ত কেন্দ্র।
চাঞ্চল্যকর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে চারিদিকে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
এ ঘটনায় জড়িতরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও সুচতুর হওয়ায় দীর্ঘ সময় পুলিশের জালে ধরা পড়েনি।
অপরদিকে নিহতের উপযুক্ত সন্তানসন্ততি না থাকায় মামলাটির তদারকিও ছিল ধীরগতি।
নিহতের পরিবারের দাবি, মোক্তার বিশাল অঙ্কের পাওনা টাকা ফিরিয়ে না দিতে ও তার ব্যবসায়ীক সম্পদের লোভে এই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে একটি পুরাতন হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি মোঃ রাসেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার সাথে আর কারা জড়িত তাও সে স্বীকারও করেছে, কিন্তু তদন্তের স্বার্থে বাকিটা বলা যাচ্ছে না। গ্রেপ্তারকৃত রাসেলকে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ওসি আরো জানান, এঘটনায় বাদি পক্ষ কে বা কারা তিনি চিনেনও না। কিন্তু অপরাধী যতবড় দুর্ধর্ষ হোকনা কেন তাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে দায়িত্বের প্রতি তিনি বিন্দুমাত্রই পিছপা হননা।