সংবাদদাতা:

সড়কের বেশিরভাগ অংশে পিচ উঠে গেছে। অনেক স্থানে সড়কের পিচের ইট-সুরকি বেরিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ছোট-বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। সেই গর্তে বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। অনেক স্থানে সড়কটির দুই পাশের মাটিও সরে গেছে। এ কারণে যান চলাচল করে হেলেদুলে।

এতে যানবাহন চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ফিশারীঘাট ভায়া ফুলতলা হয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার আবদুল হান্নান সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন ওই এলাকার ২৫হাজার মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার বদরখালী একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্র। এখানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বৃহত্তর বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি। এছাড়াও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি, বদরখালী পুলিশ বিট, কোস্ট গার্ড, এলএসডি খাদ্য গুদাম, ইউপি কার্যালয়সহ অর্ধ শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে।

সড়কটির দুপাশে কলেজ ও মাদ্রাসাসহ ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আবদুল হান্নান সড়কটির সঙ্গে লাগোয়া ২১টি উপসড়ক রয়েছে। এই সড়ক দিয়ে অন্তত ২৫গ্রামের ১০-১২হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। দেশের লবণ শিল্প ও চিংড়ি প্রকল্পে উৎপাদনে অন্যতম বদরখালী ইউনিয়নের এ সড়কটি ব্যবহার করা হয়।

২০১৯সালে বদরখালীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সভাপতি আবদুল হান্নানের নামে সড়কটির নামকরণ করে উপজেলা প্রশাসন। পরে ২০২০সালের ২৩জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি সড়কটি উদ্বোধন করে।

১৪জুলাই সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ৫কিলোমিটার দীর্ঘ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেশিভাগ অংশ ভাঙাচোরা। পুরো সড়কজুড়ে আছে ছোট-বড় গর্ত। সেই গর্তে পানি-কাদা জমে আছে। একটু বৃষ্টি হলেই গর্তগুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে যায়। পানি-কাদা মাড়িয়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, পথচারী ও যান চলাচল করছে।

ইউপি কার্যালয় থেকে বদরখালী কলেজ পর্যন্ত বড়-বড় খানাখন্দ। ফুলতলা এলাকায় এক কিলোমিটার চলাচলের উপযোগী। ব্যাটারিচালিত সিএনজি ও ইজিবাইকের চাকা গর্তে আটকে যায়। গাড়ির চলার সময় সড়কের ময়লা পানি পথচারীর গায়ে পড়ে। অনেক জায়গায় পথচারী হাঁটা-চলার জায়গাও নেই। বর্ষা মৌসূমে সড়কটি খারাপ হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক কবির আহমদ বলেন, ‘ইউপি কার্যালয় থেকে ফিশারীঘাট পর্যন্ত প্রতিদিন গাড়ি চালাই। সড়কটির অবস্থা এতটা খারাপ হয়ে গেছে বড় গর্ত হওয়ায় গাড়ি চালানো দায় হয়ে পড়েছে। গর্তে পড়ে প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও গাড়ির মেরামত করতে হয়।’

ভেরুয়াখালীপাড়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরে হাবিব তসলিম বলেন, ‘আমার মরহুম পিতা আবদুল হান্নানের নামে সড়কটি নামকরণ করা হয়। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। শুকনো মৌসুমে ধুলোবালি ও বর্ষায় কাদার কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, বদরখালী ইউপি কার্যালয় থেকে দক্ষিণ মাথা ফিশারীঘাট ভায়া ফুলতলা হয়ে নতুনবাজার পর্যন্ত সড়কটি সাড়ে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ৫বছর ধরে সড়কটি সংস্কার হয় না। গত কয়েকবছর ধরে বন্যা কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এলজিইডি চকরিয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, ‘উপকূলীয় বদরখালী বন্যা প্রবল এলাকা। সড়কটি অত্র অঞ্চলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যে বদরখালী ইউপি কার্যালয়ের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক ইতিমধ্যে দুই কিলোমিটার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। রাস্তাটির বাকী অংশটুকু মেরামতের জন্য মাপজোক সম্পন্ন হয়েছে।’