উখিয়া সংবাদদাতা:
ক্যাম্পের অভ্যন্তরের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোকে রোহিঙ্গারা চিনে “দাবাইখানা” নামে।

কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই জরুরি সেবা পেতে কেন্দ্রগুলো সুবিধাবঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীর ভরসার স্থল। উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শিবিরে এধরণের সেবা দানকারী কেন্দ্র রয়েছে শতাধিক।

যার মধ্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উখিয়ার কুতুপালংয়ের ৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাত্রা শুরু করা ওব্যাট-প্রান্তিক হেলথপোস্ট নামে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি ইতিমধ্যে দুই লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে পেয়েছে শিবিরের অন্যতম জনপ্রিয় দাবাইখানার খ্যাতি।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পড়ন্ত বিকেলে পাহাড়ের টিলায় অবস্থিত বাঁশের তৈরি দৃষ্টিনন্দন এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে আসেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত।

তিনি কেন্দ্রটির বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় সেখানকার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও সেবা গ্রহণকারী মায়েদের সাথে কথা বলেন।

এসময় শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন , ” রোহিঙ্গাদের জরুরি ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানে হেলথপোস্টটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আশা করছি ভবিষ্যতেও এটি তার সেবার মান অক্ষুণ্ণ রাখবে”।

পরে, তিনি দশ জন মায়ের হাতে সম্প্রতি ভুমিষ্ট হওয়া শিশুদের জন্য নতুন জামা, বাঁশের দোলনা, বিছানা, কাথা সহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

উপহার পাওয়া এক মাস বয়সী শিশু মোহাম্মদ আশরাফের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ” আমার ছেলে জন্ম নেওয়ার আগ থেকেই আমি এখানে সেবা নিয়েছি, এখানকার ডাক্তার আপারা খুব আন্তরিক আজকে আমার ছেলের জন্য হাদিয়া (উপহার) ও দিলো”।

প্রান্তিকের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বিশ্বাস অটল জানান, ” আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওব্যাট হেলপারস এর অর্থায়নে তিনবছর ধরে আমরা এখানে সেবা দিয়ে যাচ্ছি, দুই লক্ষের ও বেশি রোহিঙ্গা আমাদের এখানে চিকিৎসা নিয়েছে পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নাগরিকদেরও আমরা প্রয়োজনে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছি।”

এসময় ক্যাম্প-৪ ইনচার্জ উপসচিব মাহফুজার রহমান, সিআইসি কার্যালয় ও প্রান্তিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মায়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পেয়েছে মানবিক আশ্রয়।