বার্তা পরিবেশক :

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও কেন্দ্রীয় কালী মন্দির সংস্কারের নামে কয়েক দফা বরাদ্দ এনে বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ ও অর্থ হরিলুটের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সচেতন সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন এ অভিযোগটি করেন স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে। এমন অভিযোগে তাদের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ করায় কয়েকজন সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকদের ভয়ভীতি ও তিরস্কারও করেছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। বার বার কালি মন্দির সংস্কারের নামে বরাদ্দ এনে লোক দেখানো কয়েকটি কাজ দেখিয়ে অর্থ হরিলুটের মহোৎসব চলায় চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে পূজারি, ভক্তসহ মন্দির সংশ্লিষ্টদের। মন্দিরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বিভিন্ন ইউনিয়নের পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকর্মীরা। যদিও বা পরে বকেয়া বিল পরিশোধ করে সংযোগ সচল করা হয়।

জানা যায়, শত বছর আগে স্থাপিত ঈদগাঁও কেন্দ্রীয় কালী মন্দির। কক্সবাজারে যে কয়েকটি মন্দির রয়েছে তারমধ্যে এটি এক অনন্য নিদর্শন স্থান। বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের সনাতন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আশ্রয়স্থল এটি। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। মন্দিরের সামনে দুইটি স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও মন্দিরটি রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়।

পুজা উদযাপন কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, এই মন্দিরটি সংস্কারের নামে একাধিক বার বিভিন্ন দপ্তর, ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ আনা হয়েছিল। কিন্তু কোনদিনও সংস্কার কাজে ব্যয় করেনি। বর্তমানে পুরাতন মন্দিরে ৪ টি কক্ষ নিয়ে চলছে ধর্মীয় কার্যক্রম, সামনের দরজা, টিন, লোহার ঘেরা ইত্যাদি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। তারা আরো বলেন, বছর দুয়েক আগে তাদের পুরাতন মন্দিরটি সংস্কারের জন্য আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়। ইত্যবসরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা সংস্কারের লক্ষে আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সহযোগিতায় ১০ লক্ষ টাকা অনুদান পান ঈদগাঁও কেন্দ্রীয় কালী মন্দির কমিটি। যথা সময়ে কালি মন্দির সংস্কারের লক্ষে দরপত্র আহ্বান করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কাজটি পান সুমন শর্মা নামের এক ঠিকাদার।

অভিযোগে আরো জানা যায় , ট্রাস্টি বোর্ডের ১০ লাখ টাকা অনুদানের পরপরই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীনের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। মন্দির কমিটির সুচতুর কয়েকজন নেতা টেন্ডার হওয়া ভবনের নিচে পিলার নির্মাণের নামে ৫ লাখ টাকা ব্যয় দেখান, অথচ সেখানে খরচ হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা । বাকি দেড় লাখ টাকার কোন হদিসও নেই বলে গুঞ্জন উঠেছে। সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের ধারণা দেড় লাখ টাকা বিভিন্ন কৌশলে হরিলুট করেছে বর্তমান মন্দির কমিটির নেতারা।

যদিওবা অভিযোগ অস্বীকার করছে সভাপতি/সম্পাদক। এসব বিষয়ে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টির সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন সভাপতি বাবু উত্তম রায় পুলক। সাধারণ মানুষ ও সচেতন সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজনের দাবী স্বচ্ছ জবাবদিহি মুলক হিসাব নিকাশ করে মন্দিরে সংস্কার হোক।

এদিকে ” মন্দির সংস্কারের নামে বরাদ্দ এনে বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ ” শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তড়িঘড়ি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় মন্দির কমিটির নেতারা। এর পরপরই গোপনে বৈঠকে বসেন সিন্ডিকেটের ৫/৬ জন সদস্য। বৈঠক থেকে পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে বিষদ আলোচনা হয় বলে সুত্রে জানা গেছে।

উল্লেখিত বিষয়ে জানতে হিন্দু কল্যান ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।