সিবিএন ডেস্ক:
ডেনমার্কের আলো-বাতাসে দুজনেই বড় হয়েছেন। সেখানেই ফুটবলে হাতেখড়ি বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও পাকিস্তানের হাসান বশিরের। শিকড়ের টানে নিজ নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন দুজন। কিন্তু জামাল ভূঁইয়া যেখানে সাবলীল গতিতে লাল-সবুজ দলে খেলছেন, ততটা পারছেন না হাসান বশির। এখন পর্যন্ত জামালের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে পঞ্চাশের বেশি ম্যাচ খেলা হয়েছে। সেখানে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব করা হাসানের খেলা হয়েছে মাত্র ২০ থেকে ২১টি! এমন অবস্থায় লজ্জা পাচ্ছেন, বিব্রত হচ্ছেন এই ৩৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। পাকিস্তানভিত্তিক দ্য নিউজের সঙ্গে আলাপকালে হতাশাই ব্যক্ত করেছেন হাসান।

বাংলাদেশের চেয়ে অনেক দিক দিয়েই পিছিয়ে আছে পাকিস্তানের ফুটবল। দক্ষিণ এশিয়ার ‘বিশ্বকাপ’ বলে অভিহিত সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ একবার চ্যাম্পিয়ন ও ‍দুইবার রানার্স-আপ হয়েছে। এছাড়া এসএ গেমসে দুইবার সোনা জেতার রেকর্ড আছে। সেখানে পাকিস্তান কোনোবারই সাফের ফাইনালে খেলতে পারেনি। এছাড়া নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তো একাধিকবার ফিফার সাসপেনশেনের খড়গও নেমে এসেছে। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনও কার্যক্রম নেই পাকিস্তান দলের।

২০১২ সালে হাসানের পাকিস্তানের জার্সিতে অভিষেক হয়। ঠিক এক বছর পর বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয় জামালের। কিন্তু এই ক’বছরে প্রচুর ম্যাচ খেলা হয়েছে এই মিডফিল্ডারের। সেক্ষেত্রে হাসান অনেকটাই পিছিয়ে।

দ্য নিউজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে জামালের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন হাসান, ‘আমি জামাল ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলছিলাম। বাংলাদেশের হয়ে সে কতগুলো ম্যাচ খেলেছে, অধিনায়কক্ত করেছে- এসব নিয়ে। সে বললো, ৬০ থেকে ৭০টি ম্যাচ খেলেছে, অভিষেকের পর থেকে। জামালের অভিষেক হয়েছে আমার এক বছর পর। অথচ আমি এর মধ্যে খেলেছি ২০ থেকে ২১টি ম্যাচ। এটা আমাদের জন্য লজ্জা ও বিব্রতকর। এটা দুঃখজনকও। এই অবস্থাটা আমাদের সবকিছু শেষ করে দিচ্ছে।’

পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জেরবার অবস্থা। অনিয়ম তো লেগেই আছে। তার ওপর ফিফার নিষেধাজ্ঞা। সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় যাচ্ছে তাদের।

বর্তমানে ডেনিশ ক্লাবে খেলা হাসান দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্ধকারে আছেন, ‘কঠিন সময় পাড়ি দিচ্ছে পাকিস্তান। ফিফার নিষেধাজ্ঞা চলছে। কখন ঠিক হবে তা কেউ জানে না। প্রায় সবাই ফুটবল খেলে পরিবার চালিয়ে থাকে। আশা করছি, ভবিষ্যতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু কীভাবে হবে, কবে হবে, তা জানি না’

ক্ষতিটা শুধু পাকিস্তানে আছেন তাদেরই নয়, বাইরে যারা আছেন তাদেরও হচ্ছে বলে হাসানের অভিমত, ‘এতে শুধু পাকিস্তানভিত্তিক খেলোয়াড়রাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বিদেশি যারা থাকে তারাও হয়েছে। আমাদের জীবন হয়তো পাকিস্তানে যারা থাকে, তাদের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কিন্তু ফুটবল হলো আমাদের জীবন এবং প্যাশন। সেভাবে দেখলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’