সিবিএন ডেস্ক:
আলি দাইয়িকে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন, অপেক্ষা ছিল তাকে ছাড়িয়ে রেকর্ডটা নিজের করে নেওয়ার। তবে তা ছাপিয়েও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো হয়তো চেয়েছিলেন দলের জয়টাই। তার এ চাওয়াটাকে বাস্তবতায় রূপ নিতে দেয়নি বিশ্বের এক নম্বর দল বেলজিয়াম।
ইউরো ২০২০ এর শেষ ষোলয় ১-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগালকে। তাতে সম্ভাব্য শেষ ইউরো থেকে রোনালদোর প্রস্থানটাও হলো দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে, খালি হাতে।

নির্ধারিত সময় শেষে তখন চলছে ইনজুরি সময়ের খেলা। পর্তুগালের ‘নতুন রোনালদো’ জোয়াও ফেলিক্স বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে দারুণ এক শট নিলেন। কিন্তু একটুর জন্য তা বেরিয়ে গেল লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে।

ইনজুরি সময়ের এই ঘটনা যেন পর্তুগালের পুরো ম্যাচেরই চিত্র। এ কারণেই ফলাফলটা মোটেও জানান দিচ্ছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কি দাপটটাই না ছিল এ ম্যাচে। জবাবটা মন্দ দিচ্ছিল না বেলজিয়ামও। হবেই না কেন, বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে যে লড়াইটা ছিল বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা দলের!

তবে এ দৃশ্যটা প্রায় পুরো ম্যাচের হলেও প্রথমার্ধটা কেটেছে তুলনামূলক ম্যাড়মেড়েই। মাঝমাঠের দখলে এগিয়ে থাকলেও বেলজিয়ান রক্ষণ ভাঙতেই গলদঘর্ম হচ্ছিল পর্তুগাল। প্রতি-আক্রমণের কৌশলে বিরতির আগে বেলজিয়ামও অবশ্য খুব একটা ত্রাস ছড়াতে পারেনি পর্তুগীজ রক্ষণে।

এক পর্যায়ে যখন মনে হচ্ছিল প্রথমার্ধ শেষে গোলহীনতাই হতে যাচ্ছে ম্যাচের নিয়তি, তখনই দুই দলের ব্যবধানটা গড়ে দিয়েছিলেন হ্যাজার্ড। না, এডেন হ্যাজার্ড নন। তার ছোট ভাই থর্গান হ্যাজার্ড। ৪২ মিনিটে বক্সের বাইরে একটু ফাঁকা জায়গা পেয়েই শট নেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ফরোয়ার্ড তাতেই গোল। সেটাই বিরতির আগে পিছিয়ে দেয় রোনালদোদের।

এক পর্যায়ে যখন মনে হচ্ছিল প্রথমার্ধ শেষে গোলহীনতাই হতে যাচ্ছে ম্যাচের নিয়তি, তখনই দুই দলের ব্যবধানটা গড়ে দিয়েছিলেন হ্যাজার্ড। না, এডেন হ্যাজার্ড নন। তার ছোট ভাই থর্গান হ্যাজার্ড।

৪২ মিনিটে বিল্ড আপের শুরুটা হয়েছিল থিবো কোর্তোয়া থেকে। বাড়ানো তার লং বল ওপরে থাকা রোমেলু লুকাকু আয়ত্বে নেন ভালোভাবেই। এরপর পর্তুগীজ হাই প্রেস সহ্য করে বাড়ান হ্যাজার্ডকে। তিনি বক্সের বাইরে একটু ফাঁকা জায়গা পেয়েই শট নেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ফরোয়ার্ড তাতেই গোল। সেটাই বিরতির আগে পিছিয়ে দেয় রোনালদোদের।

ম্যাচে পিছিয়ে পড়া পর্তুগালের আধিপত্য বিরতির পর আরও। তবে গোলবারের নিচে ছিলেন কোর্তোয়া, যিনি দারুণ দক্ষতায় গোটা কয়েক শট ঠেকিয়ে বেলজিয়ামের এক গোলের লিডকে রেখেছিলেন অক্ষত।

বিরতির ঠিক পরই দলের প্রাণভোমরা কেভিন ডি ব্রুইনাকে হারিয়েছিল বেলজিয়াম। শেষ ৪৪ মিনিটে তাই গুছিয়ে আক্রমণ করার চেয়ে পর্তুগালের আক্রমণ সামলে প্রতি আক্রমণের কৌশলই বেছে নিয়েছিলেন বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।

কোচ ফের্নান্দো সান্তোসের অধীনে নিজেদের সেরা আক্রমণাত্মক প্রদর্শনীরই যেন আয়োজন করে বসেছিল পর্তুগাল। ৫৯ মিনিটে রোনালদোর বাড়ানো বলে ডিয়েগো জোটা যদি মিসটা না করতেন, কিংবা এর আগে-পরে ফেলিক্স, ডিয়েগো ডালোটরা, তাহলে হয়তো ফলাফলটা অন্যরকমও হতে পারত। দুর্ভাগ্যও যেন পিছু নিয়েছিল পর্তুগালের। নাহয় ৮৩ মিনিটে রাফায়েল গেরেরোর শটটা কেন প্রতিহত হবে পোস্টে?

এমন দুর্ভাগ্য, আর নিদারুণ ব্যর্থতায় আর সমতাসূচক গোলের দেখা পায়নি রোনালদোর দল। ফলে ৩২ বছর পর বেলজিয়ামের বিপক্ষে হারের বিষাদে পুড়েছে পর্তুগাল। আশির দশকের আরও একটা স্মৃতিও ফিরিয়েছে দলটা। এবারের ইউরো থেকে তারা বিদায় নিয়েছে মাত্র একটি জয় নিয়ে। এমন কিছু শেষবার দলটার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছিল সেই ১৯৮৪ সালে।

এর ফলে রোনালদোর সম্ভাব্য শেষ ইউরোও শেষ হয়েছে ব্যর্থতায়। আর র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা বেলজিয়াম শেষ আটে তো উঠেই গেছে, নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাফল্যের স্বপ্নটাকেও বাঁচিয়ে রেখেছে ভালোভাবেই।