বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী এলাকার আব্দুর রহমান আজাদ নামে এক ব্যবসায়ীকে র‌্যাবের না ভাঙিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অপর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে এই হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি আজাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক দুইটি অলিখিত স্বাক্ষরযুক্ত চেক ও খালী ষ্ট্যাম্প ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠে। এবিষয়ে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী কক্সবাজার সদর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভারুয়াখালীর উল্টাখালী এলাকার ছৈয়দ কাছিমের ছেলে আব্দুর রহমান আজাদের সাথে পূর্ব পরিচিত ছিল ঈদগাঁহ বাস ষ্টেশন হাজী শফি মার্কেটের ‘মক্কা পোল্ট্রি ফিস এন্ড মেডিসিন সেন্টার’ এর মালিক মৃত মীর আহাম্মদের ছেলে আবু তৈয়বের সাথে। এই সুবাদে আবু তৈয়বের কাছ থেকে ফিড (মুরগির খাবার) ক্রয় করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে আসছে আজাদ। এমনকি চলতি বছরের মে মাসের ১০ তারিখ ফিড ক্রয় করার জন্য তৈয়বকে নগদ ৬ লাখ টাকা প্রদান করে আজাদ। টাকা প্রদানের একদিন পর ফিড সরবরাহ দেওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিড সরবরাহ না করে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে তৈয়ব।

অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে ফিড সরবরাহ করতে না পারায় বিভিন্ন ফার্মে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি ব্যবসায়িরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খাদ্য সংকট এবং অসুস্থ হয়ে ফার্মের অনেক মুরগি মারা যায়। ফিড সরবরাহ না করার কারণে ক্ষতির বিষয়টি তৈয়বকে জানালে উল্টো হুমকি ধমকি দিতে থাকে। বিষয়টি মার্কেটের অপরাপর ব্যবসায়ীদের অবগত করলে; এতে ফের ক্ষিপ্ত হয় তৈয়ব। এর ধারাবাহিকতায় ২০ মে সকাল ১১ টার দিকে ভারুয়াখালীর উল্টাখালী মঞ্জুর ড্রাইভারের বাড়ির সামনে তৈয়বের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত তার পথ গতিরোধ করে। এসময় দুর্বৃত্তরা ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক আজাদের কাছ থেকে ইসলামী ব্যাংকের দুইটি অলিখিত স্বাক্ষরযুক্ত চেক ও ৩০০ টাকা মূল্যমানের নন জুডিসিয়াল খালী ষ্ট্যাম্প ছিনিয়ে নেন।

ভুক্তভোগি আব্দুর রহমান আজাদ বলেন, তৈয়ব আমার অলিখিত স্বাক্ষরযুক্ত চেক ও খালী ষ্ট্যাম্প পূরণ করে বহু ধরণের ক্ষতি করতে পারে। যার কারণে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ ছাড়াও নিরাপত্তাহীনতায় থাকায় আদালতে মামলাও দায়ের করেছি তার বিরুদ্ধে। এমনকি এই তৈয়ব আরো বহু মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে বলে শুনেছি। অনেকেই তার কাছে প্রতারণার শিকার হয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগও দায়ের করেছে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়িক লেনদেনে বর্তমানে আমি তৈয়বের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওনাদার আছি। তার কাছ থেকে আমি ফিড (মুরগির খাবার) নিয়ে বিভিন্ন ফার্মের সরবরাহ করি। এই বাবদ তার কাছ থেকে আমি বিক্রির উপর কমিশন পাচ্ছি প্রায় ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত।

একটি হিসেবে আজাদ বলেন, ফিড সরবারহ বাবদ তৈয়ব আমার কাছ থেকে টাকা পাওনাদার ছিল প্রায় সাড়ে ১১ লাখ মতো। এরমধ্যে ফিডের জন্য মে মাসের ১০ তারিখ ৬ লাখ টাকা দিয়েছি নগদ। টাকা রেখে দিয়েছে কিন্তু ফিড সরবরাহ দেয়নি। এক্ষেত্রে ৬ লাখ টাকা কেটে নিয়েছে সে। কিন্তু তার কাছ থেকে আমি কমিশনসহ বিভিন্নভাবে প্রায় ৯ লাখ টাকা পাওনা আছি। এই পাওনা কমিশন থেকে সে যদি তার টাকা কেটে নেন তাহলে বর্তমানে তার কাছ থেকে আরো সাড়ে তিন লাখ পাওনা আছি। বর্তমানে এসব টাকা না দেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এমনকি তার প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ না করার জন্য র‌্যাব পরিচয় দিয়েও হুমকি দিচ্ছে তৈয়ব। তার হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। যেকোনো সময় তৈয়ব আমাদের পরিবারে হামলা করতে পারে। এমনকি মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন ধরণের হয়রাণি চেষ্টা করছে সে। এবিষয়ে আমি ও আমার পরিবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একই সাথে এই প্রতারকের শাস্তির দাবী জানান।