বিশেষ প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে কর্মরত এনজিও লাইট হাউস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নারী কর্মীদের যৌন হয়রানি ও হেনস্তা করার অভিযোগ এনে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১ এ একটি ফৌজদারী দরখাস্ত দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন অভিযোগটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন) এর পুলিশ সুপার’কে ফৌজদারী দরখাস্তটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। যার নম্বর : সিপি-১৫৭/২০২১ ইংরেজি। বৃহস্পতিবার ২৪ জুন সকালে এনজিও লাইট হাউসের নির্যাতিতা নারীকর্মী, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার চরবাঙ্গালিয়ার স্বপন রেমা ও স্নেহ লতা মান্ধিকের কন্যা বৃষ্টি মান্ধিক বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। বাদীনি বৃষ্টি মান্ধিক বর্তমানে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীতে ভাড়া বাসায় থাকেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত,-২০০৩) এর ১০/৩০ ধারায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
বাদীনি বৃষ্টি মান্ধিককে আইনী সহায়তা দেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির নিয়োগকৃত প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী জানিয়েছেন, মামলার বাদীনি বৃষ্টি মান্ধিক কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডের বড় মসজিদ সংলগ্ন এনজিও লাইট হাউসের SRH প্রকল্পে কর্মরত আছেন। সেখানে তাকে বিভিন্ন সময়ে যৌন হয়রানি ও হেনস্তা করা হয়। পরে এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড কমিটিতে অভিযোগ করা হলে জেলা লিগ্যাল অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মৈত্রী ভট্টাচার্য্য এনজিও লাইট হাউস কর্তৃপক্ষ ও অভিযোগকারী নারী কর্মীদের মধ্যে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর সুনির্দিষ্ট ৫ দফা লিখিত নির্দেশনা দিয়ে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে দেন। যার নম্বর : বিরোধ-৩৮৮/২০২০ ইংরেজি। নির্দেশনায় নারী কর্মীরা Sexual Harrurassmet হয়, এমন আচরণ থেকে এবং শালীন পোশাকের বিষয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য এনজিও লাইট হাউস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া কর্মস্থলে নারীকর্মীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে বলা হয়। প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহের আরো সতর্ক ও সজাগ থেকে দুর্নীতি দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এরপরও এনজিও লাইট হাউস কর্তৃপক্ষ নারী কর্মীদের প্রতি যৌন হয়রানি, মানসিক নির্যাতন ও অসদাচরণ করতে থাকে।
ফৌজদারী দরখাস্তে এনজিও লাইট হাউসের নির্বাহী পরিচালক হারুনর রশিদ, এনজিও লাইট হাউস SRH প্রকল্পের টিম লিডার গ্রেনার মারাক, HR Coordinator আনোয়ার শাহাদাত রবি, Mail Coordinator আফরোজা নাজনীন, মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট মিজাজুন নাহার মানিক, ফিল্ড মনিটর মারিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান ও কাউন্সিলর সানজিদাকে আসামি করা হয়েছে। ফৌজদারি অভিযোগে ৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আদালতে ফৌজদারী অভিযোগটির গ্রহনযোগ্যতা শুনানীকালে লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’র সাথে এডভোকেট (শি:) মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।