শাহেদ মিজান, সিবিএন:

রোহিঙ্গা ভোটার ও পাসপোর্টের করার দায়ে নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তোলপাড় চলছে। এই কারণে কক্সবাজারের বিভিন্ন ইউনিয়নের বহু চেয়ারম্যান ও মেম্বার গা ঢাকা দিয়েছে। দুদকের মামলায় আসামী হয়েছে রামু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাও। সে কারণে রামুতে বেশি রোহিঙ্গা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই রামুর চেয়ারম্যান মেম্বারদের মধ্যে বেশি ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

দুদকের তথ্য বলছে, কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের একটি পরিবারেই প্রায় ২০০ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যারা ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করেছেন।

আরেকটি পরিসংখ্যান বলছে, দেশের রোহিঙ্গা ভোটার রয়েছে কয়েক লাখ! দুদকের অনুসন্ধানে এমন পিলে চমকানো তথ্য বেরিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা ভোটার নিয়ে বেশ কঠোর হয়েছে। সম্প্রতি তারা আলোচিত দুটি মামলাও দায়ের করেছেন।

এদিকে রামুর চাকমারকুলের ৭নং ওয়ার্ডে শতাধিক রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে বলে স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

দুদকের তথ্য বলছে, রোহিঙ্গা ভোটারদের অধিকাংশই কক্সবাজারে। জেলার টেকনাফ, উখিয়া, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে রোহিঙ্গা ভোটার রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলাতেও রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে। দুদকের বলছে, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তভর্ূক্তিতে জড়িত রয়েছে জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তারা। সবার যোগসাজসেই বহু রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে। এই জন্য লেনদেন হয়ে মোটা অংকের টাকার।

দুদকের তথ্য হলো- এসব লোক মিয়ানমারের নাগরিক হয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারী বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পেয়েছেন জাতীয়তা সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ, ভূমিহীন প্রত্যয়নপত্র, স্কুলের প্রত্যয়ন। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন রোহিঙ্গারা। তাদের হাতে এখন স্মার্টকার্ড ও বাংলাদেশী পাসপোর্ট। অনেকে স্বপরিবারে থাকে প্রবাসে। সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরিও করছে তারা।

দুদকের অনুসন্ধান মতে- এসব পুরাতন রোহিঙ্গারা ভুয়া নাম-ঠিকানায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভোটার হয়েছেন। তারা একজন অপরজনের পরিবারের সদস্য দেখিয়ে পাসপোর্ট নিয়েছেন। অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদের ভোটার ও পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতা করেছেন কিছু বাংলাদেশী লোক। এসব রোহিঙ্গাদের অনেকে আবার জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপনাসহ সামাজিক কার্যক্রম করছেন। এদিকে, জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩ রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা, বর্তমানে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের অতিরিক্ত কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হোসেনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা কক্সবাজারে আরো বহু রোহিঙ্গা ভোটারের তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন। সেব ঘটনায়ও মামলার দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুদক।