বাংলাট্রিবিউন: করোনাকালীন সময়ে রাজশাহীতে কোনও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল জলিল। বুধবার (১৬ জুন) রাতে নগরীর সার্কিট হাউসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা এক মাস আগেই কিস্তি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছি। যারা কিস্তির টাকা নিয়েছে তারা এই মুহূর্তে পরিশোধ করতে পারবে না। যারা কিস্তি পরিশোধ করতে পারবে না তাদের চাপ দেওয়া যাবে না। সব এনজিওকে ডেকে এমন নির্দেশনা দিয়েছিলাম। এরপরও যদি কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়, আমাদের জানাবেন; সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবো।

ডিসি আবদুল জলিল বলেন, লকডাউন চলাকালীন নগরীর সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। তাই জেলাও অঘোষিতভাবে লকডাউনের ভেতরে চলে এসেছে। লকডাউন চলাকালে নগরীতে শুধু জরুরি সেবার অফিস খোলা থাকবে। অন্য সব অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। লকডাউন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে নির্দেশনা আছে, ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সে নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। নগরীর সব মার্কেট, দোকানপাট, বিনোদন কেন্দ্র, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নগরে সব ধরনের গণপরিবহন ঢোকা নিষিদ্ধ থাকবে।

এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় আরও সাত দিন বিশেষ লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৪ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর লকডাউন কার্যকর হবে। বুধবার রাত ৮টায় সার্কিট হাউসে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ের সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, পাড়া-মহল্লায়, বাড়িতে বাড়িতে এখন করোনা রোগী। প্রথমে সাত দিন লকডাউন দিয়েও কোনও উন্নতি হয়নি। তাই আরও সাত দিন লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। ২৪ জুন পর্যন্ত রাজশাহীতে লকডাউন থাকবে।

এর আগে গত ১০ জুন রাতে রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক শেষে ১১ জুন বিকাল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউনেও রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।

বুধবার রাতে এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, রিকশা-অটোরিকশা ধরলেই রোগী পাওয়া গেছে। প্রেসক্রিপশন পাওয়া গেছে। তাই মানবিক কারণে ছেড়ে দিতে হয়েছে। তবে এবার সাত দিনের লকডাউন আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

রাজশাহীতে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১২-১৩ জন মারা যাচ্ছেন। এর প্রায় অর্ধেকই রাজশাহীর রোগী।

এ বিষয়ে ব্রিফিংয়ের সময় সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রাজশাহীতে ঢুকেছে। তাই পাড়া-মহল্লার বাড়িতে বাড়িতে এখন করোনা রোগী। যেভাবে হোক এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।