সিবিএন ডেস্ক:
ঢালিউডের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরী মণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ওই মামলায় ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে সাভার মডেল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহারের আদালতে মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে আগামীকাল বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

এদিকে, চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেনকে। তিনি জানান, এই মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, রিমান্ডের আবেদন নিয়ে আগামীকাল বুধবার শুনানি হবে।

গত বুধবার গভীর রাতে সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে গেলে পরী মণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন ঢাকাই ছবির আলোচিত এই নায়িকা। পরে বনানী থানায় অভিযোগ নিয়ে গিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে মারধর ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পরে পুলিশের মাধ্যমেই রাজধানীর রূপনগর থানা ঘুরে পরী মণির লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয় সাভার মডেল থানায়।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় নাসির ইউ মাহমুদ ওরফে নাসিরউদ্দিন মাহমুদকে। নাসির জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, কুঞ্জ ডেভলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান, উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি) বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলায় নাসির, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় নাসির, অমিসহ গ্রেপ্তার পাঁচজনকে মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিএমএম আদালতে তোলা হয়। আদালত নাসির ও অমিকে সাতদিন করে এবং অপর তিন আসামিকে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

এদিকে, হাইপ্রোফাইল এই মামলায় বিমানবন্দর থানা পুলিশের কার্যক্রম শেষ হলেই শুরু হবে সাভার থানার কার্যক্রম।

পরীর সঙ্গে কথা হয়নি তদন্ত কর্মকর্তার

আলোচিত এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, তাঁর সঙ্গে এখনো মামলার বাদী চিত্রনায়িকা পরী মণির কোনো কথা হয়নি।

মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরী মণির সঙ্গে কথা বলতে সময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে হাজতখানা

বিমানবন্দর থানায় করা মাদক মামলার রিমান্ড শুনানি শেষে আসামিদের সাভার মডেল থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্ত কর্মকর্তা। তেমন সম্ভাবনা মাথায় রেখে থানার হাজতখানাকেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। দীর্ঘদিন পরে হলেও ভিভিআইপি মামলার আসামির অপেক্ষায় রয়েছে সাভার মডেল থানার হাজতখানা।

অজ্ঞাতনামাদের খুঁজতে তদন্তে পুলিশ

সাভার মডেল থানায় পরী মণির করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান দুই আসামি পুলিশের জালে ধরা পড়লেও এজাহারে উল্লেখ করা অপর চার আসামি অজ্ঞাতনামা বলে উল্লেখ করা হয়।

তাদের কাউকে কি শনাক্ত করা গেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক দূর গড়িয়েছে। প্রধান আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।’

আসামিদের রিমান্ডে পেলে অজ্ঞাতনামা অপর চারজনকেও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।