সিবিএন ডেস্ক:
সারা দেশে নির্মাণাধীন ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে ৫০টি উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (১০ জুন) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব মডেল মসজিদের উদ্বোধন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করে বুধবার (৯ জুন) মডেল মসজিদের প্রকল্প পরিচালক নজিবুর রহমান জানান, এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৩ ধরনের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে— নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের টয়লেটসহ নামাজের পৃথক ব্যবস্থা, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, ইসলামিক গবেষণা ও দ্বিনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষায় ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথিশালা, মরদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধনসহ প্রশিক্ষণ, ইমামের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসের ব্যবস্থা।

মডেল মসজিদ নির্মাণের ব্যয়
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিটি মডেল মসজিদ তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, উপজেলা পর্যায়ে মসজিদপ্রতি ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় এই ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। জানা গেছে, এই মসজিদে বছরে ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে।

আরও যেসব সুবিধা
মসজিদগুলোতে ইসলামি নানা বিষয়সহ প্রতি বছর এক লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে। মসজিদের ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে। উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে মসজিদগুলোর নিচতলা ফাঁকা থাকবে।

জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে ১২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদে একত্রে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এসব মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এছাড়া লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮শ’ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সবসময় দোয়া মোনাজাতসহ তাসবিহ পড়তে পারবেন।

যেসব উপজেলায় কাল উদ্বোধন
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) যে ৫০টি উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে সেগুলো হলো— ঢাকার সাভার, ফরিদপুরে মধুখালী ও সালথায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর ও গোসাইরহাট, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু, নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর ও উপজেলা সদর, পাবনার চাটমোহর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা, দিনাজপুরের খানসামা ও বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও উপজেলা সদর, রংপুর জেলা সদর, মিঠাপুকুর, উপজেলা সদর, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও তারাকান্দা, চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, জামালপুরের ইসলামপুর ও উপজেলা সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগরে, ভোলা সদর, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, কুষ্টিয়া সদর, খুলনার জেলা সদর, চাঁদপুরের কচুয়া, ঝালকাঠির রাজাপুর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর।