সিবিএন ডেস্ক:
আট হাজার বসনীয় নিরস্ত্র মুসলিম পুরুষ ও বালককে হত্যার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত সাকেব সার্ব কমান্ডার রাতকো স্লাদিচের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সালে স্রেব্রেনিকা শহরে গণহত্যার দায়ে তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।

১৯৯১ সালে যুগোশ্লোভিয়া সোশ্যালিস্ট ফেডারেশন ভেঙে পড়ার সময় ম্লাদিচ ছিলেন তৎকালীন সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। পরের বছর বসনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করলে তার নির্দেশে সার্ব বাহিনী দেশটিকে দুই টুকরো ফেলে। তখন তিন বছর ধরে চলে বসনিয়ার গৃহযুদ্ধ। এতে প্রায় এক লাখ মানুষ নিহত হন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত রাতকো ম্লাদিচ ছিলেন তৎকালীন সার্ব সামরিক প্রধান।

১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে সেখানে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়। ওই ঘটনায় অন্তত ৮ হাজার নিরস্ত্র মুসলিম পুরুষ ও বালককে হত্যা করা হয়েছিল। সাড়ে চার বছরের বিচারকার্য চলার পর গত বছর ডিসেম্বরে আইনজীবীরা যুদ্ধাপরাধে তার যুক্ত থাকার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দাবি জানান। পরে ২০১৭ সালের নভেম্বরে আদালতের দেওয়া রায়ে ম্লাদিচকে ওই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা আখ্যা দেওয়া হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী, তখন তার নির্দেশেই সৈনিকরা ব্যাপক গণনিপীড়ন চালায়।

বসনিয়া যুদ্ধের সময় জাতিসংঘ সার্বিয়ার সীমান্তের কাছে অবস্থিত স্রেব্রেনিয়াকে ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। হালকা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ডাচ সদস্যরা এলাকাটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। ১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই ম্লাদিচের বাহিনীর আচমকা আক্রমণে হতবিহ্বল ডাচ শান্তিরক্ষীরা আত্মসমর্পণ করে। সার্ব বাহিনী এরপর শহরটির পুরুষ ও বালকদের নারীদের কাছ থেকে আলাদা করে। পুরুষদের বাসে করে সরিয়ে নিয়ে কিংবা দূরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরদিন ব্রোঞ্জের বর্ম পরা ম্লাদিচ স্রেব্রেনিৎসার শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। ক্যামেরার সামনে তিনি শিশুদের মাঝে চকোলেট ও মিষ্টি বিলি করেন।