মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্য, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপদেষ্টা গোলাম রব্বান এর মরদেহ মঙ্গলবার ৮ জুন সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আনা হবে। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে একইদিন রাত ২ টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান এর মরদেহ বাহী কার্গোবিমান সেখান থেকে ফ্লাই করবে বলে জানিয়েছেন মরহুমের মেয়ে জামাতা ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সজীব।
তিনি আরো জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান এর মরদেহ ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে চকরিয়ার ভেওলামানিক চর গ্রামে আনা হবে। সেখানে রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় নামাজে শেষে তাঁকে দাফন করা হবে।
আশরাফুল ইসলাম সজিব বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান এর মরদেহ দেশে আনতে তাকে যাঁরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন তাদের সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান (৭৭) শুক্রবার ৪ জুন বিকেল ৪ টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার মোহাম্মদ বিন জায়েদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি–রাজেউন)।
নির্লোভ, নিরংহকার রাজনীতিবিদ গোলাম রব্বান কিছুদিন ধরে তাঁর দুবাই প্রবাসী কন্যা নাজিয়া আফরিন তাহির সঙ্গে দুবাইয়ে বসবাস করছিলেন। সেখানে তিনি চেস্ট ইনফেকশন, কিডনি সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। গত ৩০ মার্চ একাত্তরের রনাঙ্গনের এই বীর সেনানী গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজা শহরের মোহাম্মদ বিন জায়েদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান।
অদম্য সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী গোলাম রব্বান মহান মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চলে বিএলএফ’র কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি এক নম্বর সেক্টরে গেরিলা যুদ্ধের অন্যতম সমন্বয়কারী ছিলেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ গোলাম রব্বান ১৯৪৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ভেওলা মানিকচর (বিএমচর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জেবর মুল্লুকের সন্তান। তিনি দুই কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক।
তিনি ষাটের দশকে রাজপথ কাঁপানো একজন ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) এর কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন তিনি। তিনি ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম মুজিব বাহিনীর কমান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, কক্সবাজার জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন-একাত্তরের দেশপ্রেমিক এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বিশিষ্ট সংগঠক গোলাম রব্বান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্ঠা ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সফলভাবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকাকালীন সময়ে ১৯৬৭ সালে স্বৈরাচার আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ত্যাগী এই রাজনীতিবিদ। এসময় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।