সিবিএন ডেস্ক:
শ্বাসতন্ত্র এবং হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। তামাক ব্যবহারে করোনারি হার্ট ডিজিজ এবং স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি ২ থেকে ৪ গুণ বেড়ে যায়। আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে দিবসটি চালু করে। প্রতি বছর ৩১ মে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন করা হয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘কমিট টু কুইট’। তামাকবিরোধী প্রচারাভিযানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস জানিয়েছেন, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ধূমপায়ীদের করোনায় মৃত্যুর ৫০ শতাংশ ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু কোভিড থেকে সুরক্ষা নয়; ধূমপান ছাড়লে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ফুসফুস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
বাংলাদেশে এবার দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে। দিবসটি উপলক্ষে তামাক বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন আজ কর্মসূচি পালন করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তামাক ব্যবহারে মুখ গহ্বর, ফুসফুস, খাদ্যনালীসহ প্রায় ২০ ধরনের ক্যানসার হয়। অধূমপায়ীর তুলনায় ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ২৫ গুণ। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুস সংক্রমণে (সিওপিডি) ধূমপায়ীদের মৃত্যুঝুঁকি অধূমপায়ীদের তুলনায় ১৩ গুণ পর্যন্ত বেশি। সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারিতে ধূমপায়ীদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি ৪০–৫০ শতাংশ বেশি।
চিকিৎসকরা পরিবার এবং অন্যের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব বারবারই সতর্ক করে আসছেন।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন ৪ কোটি ৮ লক্ষ মানুষ এবং এক্ষেত্রে নারীরা অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়া ৯৫ শতাংশ শিশুর শরীরে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে, যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান।
গবেষণা অনুযায়ী, তামাকের কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। যার মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই এক লাখ ২৬ হাজার।
দিবসটি উপলক্ষ্যে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠী পণ্যের দামবৃদ্ধির প্রতি অধিক সংবেদনশীল। তামাকপণ্যের দাম বাড়লে দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে তামাকের ব্যবহার, তামাকজনিত মৃত্যু ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি অধিকহারে হ্রাস পায়। তাই তামাকে বর্ধিত করারোপ একটি দরিদ্র-বান্ধব পদক্ষেপ।
এবিএম জুবায়ের বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ অর্জন করতে হলে সিগারেটসহ সকল তামাকপণ্যের দাম সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে বৃদ্ধি করে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।