এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে পারিবারিক কলহের জেরে মেয়ের জামাতার এলোপাতাড়ি কিরিচের কুপে জখম হয়েছেন শ^শুর শাশুড়ি ও শ্যালকসহ একই পরিবারের তিনজন। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গর্জনতলীর নলবনিয়া গ্রামে ঘটেছে পৈশাচিক এ ঘটনা। গুরুতর আহত শ^শুর রমজান আলী (৬০), শাশুড়ি সুফিয়া খাতুন (৫২) ও শ্যালক আবদুস শুক্কুরকে (১৮) চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তদমধ্যে শাররীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত রমজান আলীকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

এদিকে হামলার ঘটনায় আহত রমজান আলীর মেয়ে জোবাইদা আক্তার বাদি হয়ে গতকাল রাতে চকরিয়া থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ্যপুর্বক আরো বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।

বাদি জোবাইদা আক্তার বলেন, আমার ছোট বোন রেহেনা আক্তারকে সামাজিক ও ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী বিয়ে দেন গর্জনতলীর নলবনিয়া এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে সরওয়ার কামালের সঙ্গে। বিয়ের সময় আমার মা-বাবা যৌতুক হিসেবে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও কাপড়চোপড় সবই দেন। সংসারে তাদের একটি সন্তানও আছে। এরই মধ্যে প্রসবজনিত কারণে ছোট বোন রেহেনা আক্তার গত ৩ মার্চ মারা গেছেন।

জোবাইদা আক্তার বলেন, মৃত্যুর আগে ছোট বোন রেহেনা বেগমকে আমার মা-বাবা একটি ভিটাজমি কিনে দেন। পাশাপাশি তার স্বামী সরওয়ার কামালের দায়দেনা পরিশোধ করতে আমি নগদ ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ধার দিই। মুলত আমার বোন রেহেনা আক্তার মারা গেলে স্বামী সরওয়ার মা-বাবার কিনে দেওয়া ভিটাজমি এবং আমার ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত না দিতে নানাধরণের তালবাহানা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে বেশ কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে।

সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সকালে আমার বাবা রমজান আলী ও মাতা সুফিয়া খাতুন উল্লেখিত ভিটাজমি ও ধার দেওয়া ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বোনের স্বামী সরওয়ার কামাল। এসময় আমাদের বাড়িতে ঢুকে সরওয়ার এবং তাঁর সহযোগি সাঈদী, হারুন, আনারকলি, সাবু ও রিয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বে দুর্বত্তরা ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় বাঁধা দিতে গেলে আমার বাবা রমজান আলী, মাতা সুফিয়া খাতুন এবং ছোট ভাই আবদুস শুক্কুরকে ধারালো কিরিচের কুপে এবং পিটিয়ে সর্বশরীরে জখম করে। ঘটনার সময় আশপাশের প্রতিবেশি লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চকরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত গৃহকর্তা রমজান আলী ও তাঁর স্ত্রী সুফিয়া খাতুন অভিযোগ করেছেন, হামলার পর থেকে মেয়ের জামাতা সরওয়ার কামাল এব্যাপারে মামলা করলে পরিণতি আরো খারাপ হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। বাড়িতে গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই, আমরা বাঁচতে চাই। #