ফারহানা কবির চৌধুরী

ঈদঁগা মন্জুর হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধিত ২০০৩) এর মতো পুরুষ নির্যাতন দমন আইন করা উচিত।

বর্তমানে অনেক পরিবারে মধ্যে পুরুষ নির্যাতনের বিষয় টা দেখা যায়। যদিও বিষয়টি আগেও ছিলো কিন্তু বর্তমানে বেড়ে গিয়েছে। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে কিছু করতে পারেনা।

অনেকে র মধ্যে শুনি আমার শাশুড়ী আমার সংসারে খুব হস্তক্ষেপ করে। না পারি বলতে না পারি সহ্য করতে।আমার বাাবা মা,ভাইবোন কে সহ্য করতে পারেনা।
আবার অনেক মা রা বলেন,আমার মেয়ের জামাই অনেক ভাল,আমার নিজের ছেলেটা কেমন, খালি বউয়ের কথা শুনে।

আরেক জনের ছেলে শুনলে ভাল,নিজের ছেলে শুনলে খারাপ। এ হলো আমাদের বর্তমান সমাজের চিত্র।

আবার আমাদের চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দেনমোহর। অনেক বড় অংকের দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় যার ফলে অনেকে পারিবারিক সমস্যার সমাধানে কিছু করতে পারেনা।

এমনও অনেক ঘটনা আছে দেনমোহর টাকা পরিশোধ করতে না পারার কারনে, আত্মহত্যা করেছে। চট্টগ্রামের এক ডাক্তার পারিবারিক কলহ অবসানের কোন পথ খুঁজে না পেয়ে দেনমোহরের টাকার ভয়ে আত্মহত্যা করে।

ইদানীং কালে প্রায় পরিবারের পিতামাতা ছেলের বিয়ের পর পারিবারিক কলহের সম্মুখীন হচ্ছেন।

নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত,উচ্চবিত্ত সবশ্রেনীতে বিষয়টি বিদ্যমান। সত্নানেরা পিতামাতার দায়িত্ব পালন করতে চাই না।

আসলে আমরা দিন দিন স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। শুধু বুঝি সব আমার।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অনেকে অপব্যবহার করতে চায়। গ্রামের নারীরা যখন খুব সামান্য বিষয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে আসে খুব অবাক হয়ে যাই।

যখন জানতে চাই,কেন মামলা করবে, জামাই মারে?

না,আমি আলাদা থাকতে চাই।কিন্তু ও আলাদা হবে না। সাথে বলবে, তার স্বামীর বাবা,মা,ভাইবোন চৌদ্দগোষ্টিকে আসামি করতে হবে।যত টাকা লাগুক।

তবে হা কিছু সত্যিকারের নারী নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে।

হিন্দি সিরিয়ালও আমাদের সমাজের অনেক বড় ক্ষতি করছে। সম্পূর্ণ কাল্পনিক চরিত্র নির্ভর এসব দেখতে দেখতে তারা মানসিকভাবে দূষিত হচ্ছে।

বাবার বাড়ির জন্য অন্যরকম ভালবাসা সবারই আছে।কিন্তু বাবার বাড়ীর কেউ কিন্তু আমাদের বেহেশতে নিবেনা। মেয়েরা এটা কেন বুঝে না।

বিপদে পড়লে নিজের দুই পা ছাড়া কেউ সাথে থাকেনা কোভিড-১৯ সেটা আমাদের খুব ভালভাবে বুঝতে শিখিয়েছে।
বর্তমানে পারিবারিক সহিংসতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সমস্যা যখন সৃষ্টি হয় তখনই তা সমাধান করে ফেলার চেষ্টা করতে হবে। দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যা সমাধান না করলে বড় দূর্ঘটনার আশংকা থাকে।

লেখক: আইনজীবী, কক্সবাচার জেলা ও দায়রা জজ ঘোষক,বাংলাদেশ বেতার,ককসবাজার