মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রোহিঙ্গা শরনার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation) বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করছে। কক্সবাজার আরআরআরসি অফিস এ বিষয়ে প্রাথমিক সকল প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব শাহ রেজওয়ান হায়াত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, আমারা প্রস্তুত রয়েছি। সরকারের চুড়ান্ত নির্দেশনা পেলেই রোহিঙ্গা শরনার্থীদের করোনার ভ্যাকসিনের আওতায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিশ্বস্থ সুত্র জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম শরনার্থী শিবির বলে খ্যাত উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পাশাপাশি ক্যাম্পে কর্মরত সরকারি, এনজিও, আইএনজিও, জাতিসংঘের সংস্থার লোকজন এবং ২৫% স্থানীয় নাগরিকদের জন্যও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভ্যাকসিন আনার উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে থাকা ৩৪ রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মধ্যে ৫ টিতে করোনা সংক্রামণ আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ২০ মে থেকে ৫ টিতে কঠোর লকডাউন (Lockdown) চলছে। এই লকডাউন আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে। এছাড়া অবশিষ্ট ২৯ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে অত্যাবশ্যকীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব নিয়মিত কার্যক্রম মঙ্গলবার ২০ মে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো লকডাউন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে -কুতুপালং ওয়েস্ট ২, ৩, ৪, ১৫ ও ২৪ নম্বর।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে করোনা সংক্রামণ বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা, খাদ্য সরবরাহ, আইনশৃংখলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ছাড়া ক্যাম্প গুলোতে আর সব নিয়মিত কার্যক্রম এখন বন্ধ। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আগে গৃহীত কার্যক্রম সমুহও আরো জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার ২১ মে পর্যন্ত ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ৪১৮৮৮ জনের নমুনা টেস্ট করে ৯৪৮ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তন্মধ্যে উখিয়া উপজেলার ক্যাম্প গুলোতে ৭৭৬ জন এবং টেকনাফ উপজেলার ক্যাম্প গুলোতে ১৭২ জন। এরমধ্যে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত রোহিঙ্গা রোগী মারা গেছে। শুধুমাত্র গত ১৫ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে ক্যাম্প গুলোতে করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে ১৯২ জন। আবার ১৯ মে থেকে ২১ মে এ তিন দিনে ১২৫ জন রোহিঙ্গা করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।