মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে থাকা ৩৪ রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মধ্যে ৫ টিতে করোনা সংক্রমণ আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ২০ মে থেকে ৫ টিতে কঠোর লকডাউন (Lockdown) চলছে। এই লকডাউন আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে। লকডাউন কার্যকরে সরকারের করোনা সংক্রান্ত নির্দেশনা মতে কাজ চলছে।
এছাড়া অবশিষ্ট ২৯ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে অত্যাবশ্যকীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব নিয়মিত কার্যক্রম মঙ্গলবার ২০ মে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে করোনা সংক্রামণ বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা, খাদ্য সরবরাহ, আইনশৃংখলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ছাড়া ক্যাম্প গুলোতে আর সব নিয়মিত কার্যক্রম এখন বন্ধ। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আগে গৃহীত কার্যক্রম সমুহও আরো জোরদার করা হয়েছে। এবিষয়ে তদারকিও বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো লকডাউন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে -কুতুপালং ওয়েস্ট ২, ৩, ৪, ১৫ ও ২৪ নম্বর। এ ক্যাম্প গুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
বিশ্বস্থ সুত্র জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম শরনার্থী শিবির বলে খ্যাত উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের প্রত্যেকটিতে করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তবে লকডাউন করা উল্লেখিত ৫ টিতে অপেক্ষাকৃত বেশী করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়।
এদিকে, শুক্রবার ২১ মে পর্যন্ত ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ৪১৮৮৮ জনের নমুনা টেস্ট করে ৯৪৮ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তন্মধ্যে উখিয়া উপজেলার ক্যাম্প গুলোতে ৭৭৬ জন এবং টেকনাফ উপজেলার ক্যাম্প গুলোতে ১৭২ জন। এরমধ্যে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত রোহিঙ্গা রোগী মারা গেছে। শুধুমাত্র গত ১৫ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে ক্যাম্প গুলোতে করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে ১৯২ জন। আবার ১৯ মে থেকে ২১ মে এ তিন দিনে ১২৫ জন রোহিঙ্গা করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ২০ মে পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোর অভ্যন্তরে থাকা আইসোলেসন সেন্টারে ১১৯ জন রোহিঙ্গা রোগী চিকিৎসাধীন আছে।
ক্যাম্প গুলোতে লকডাউন চলাকালে ক্যাম্প সমুহে জরুরী বিষয় ছাড়া সবকিছুর যাতায়াত বন্ধ থাকবে। এসময় ক্যাম্প থেকে কোন শরনার্থী বা স্থানীয় মানুষ বাহির থেকে এসে ক্যাম্পে প্রবেশ করতে পারবেনা। আবার ক্যাম্প থেকে কোন স্থানীয় মানুষ বা শরনার্থী লকডাউন চলাকালে বাইরে যেতে পারবেনা। লকডাউন চলাকালে জরুরী ও অত্যাবশ্যকীয় কর্ম, খাদ্য, চিকিৎসা ব্যতীত এনজিও, আইএনজিও, জাতিসংঘের সংস্থা সহ ক্যাম্প সমুহে কর্মরত সংশ্লিষ্ট সকলের গাড়ি চলাচল ও আসা যাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।