অনলাইন ডেস্ক: ভারতে হিন্দু-মুসলমানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বাস। প্রায়ই দেশটিতে ধর্মীয় সহিংসতার খবর পাওয়া যায়। তবে হিন্দু-মুসলিম আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির কথাও উঠে আসে প্রায়ই। বিশেষ করে এই করোনা মহামারিতে অনেকেই ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সর্বশেষ এমনটি একটি ঘটনা ঘটেছে কেরালার একটি হাপসাতালে। করোনায় আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী এক মুসলিমকে কালেমা পড়ে শোনালেন চিকিৎসক রেখা কৃষ্ণা।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে বিপর্যস্ত ভারত। সংক্রামক এই রোগ থেকে বাঁচতে আক্রান্তদের থাকতে হচ্ছে আইসোলেশনে। সেক্ষেত্রে কিছুদিনের জন্য হলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। মৃত্যু পথযাত্রীর সঙ্গেও শেষ দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবারের লোকজনেরা। ওই সময় চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা রোগীদের। তাই মুসলিম রোগীর জীবনের শেষ মুহূর্তে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে হিন্দু চিকিৎসকের এমন আচরণের অনেকেই প্রশংসা করছেন।

কেরালার পলাক্করের পতম্বির সেবানা হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত এক মুসলিম নারী। ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক রেখা কৃষ্ণা। তিনিই ওই নারীর চিকিৎসা করছিলেন। আইসিইউতে ছিলেন রোগী। তবে কিছুতেই তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। চিকিৎসক বুঝতে পারছিলেন ওই করোনা রোগীকে কোনোভাবেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়। স্বজনদেরও সেকথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ওই নারীর সঙ্গে আত্মীয়দের কেউই দেখা করতে পারছিলেন না।

একদিন রেখা বুঝতে পারেন রোগীর নাড়ির স্পন্দন ধীর হচ্ছে। ঠিকমতো নিঃশ্বাস নিতেও পারছেন না। সেই সময় রোগীর কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে কালেমা পড়তে থাকেন ওই চিকিৎসক। রেখা দেখেন কলমা পড়ামাত্রই রোগী গভীর শ্বাস নেন। তারপরই মৃত্যু হয় তার।

রেখা কৃষ্ণা বলেন, ‘আমার দুবাইতে বেড়ে ওঠা। তাই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আমি কমবেশি জানি।’ আর এ কারণেই মৃত্যু পথযাত্রী করোনা রোগীর কানে কালেমা পড়ে শুনিয়েছিলেন তিনি। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন