আব্দুস সালাম, টেকনাফ:
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলার প্রত্যাহার ও তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি দাবীতে কক্সবাজারের টেকনাফের সাংবাদিক ইউনিটির উদ্যোগে সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে গত সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রোজিনার ওপর আক্রমণকারী ও হেনস্তাকারীদের বিচার দাবি করেছেন তারা।
বুধবার (১৯ মে) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে টেকনাফ বাস ষ্টেশন এলাকায় সাংবাদিক ইউনিটির প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবীণ সাংবাদিক হাফেজ মোহাম্মদ কাশেমের সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে সাংবাদিকেরা এই দাবি করেন।
সমাবেশ ও মানববন্ধনের একাত্মতা ঘোষণা করেন-বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) টেকনাফ উপজেলা শাখা, টেকনাফ পৌর প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন-রেন্ট এ কার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রফিক, সাংবাদিক ইউনিটির উপদেষ্টা মমতাজুল ইসলাম মনু, জিয়াউল করিম,সুশীল সমাজের নাগরিক মোহাম্মদ ইউনুস, স্কুল শিক্ষক বাবুল ইসলাম প্রমূখ।
এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে যোগ দেন প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হোসাইন বলেন,সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিষয়ে জোর দেন।প্রশাসন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। আগে সাংবাদিক নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটলেও কোনো বিচার হয়নি।
রোজিনা ইসলামের জামিন ও মামলা প্রত্যাহার না হলে লাগাতার দেশের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ থেকে আন্দোলন চলবে।
সাংবাদিক ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফী বলেন,রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন তিনি।জনগণের টাকা লুট করে পাহাড় বানাবেন সেইটি নিয়ে সাংবাদিকেরা প্রতিবেদন প্রকাশ করলে এভাবে হেনস্তা করলে সাংবাদিক সমাজ বসে থাকবে না।
তিনি বলেন, রোজিনা ইসলামকে প্রায় ৬ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। এরসঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
টেকনাফ পৌর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন,মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের ধমিয়ে রাখা যাবে না।রোজিনা ইসলামের জন্য আজ টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ,রূপসা থেকে পাতুরিয়া পর্যন্ত সাংবাদিক সমাজের পাশাপাশি রাজপথে নেমেছে। অবিলম্বে স্বাস্থ্য বিভাগের দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম(বিএমএসএফ) টেকনাফ উপজেলার সভাপতি ফরহাদ আমিন বলেন, সাংবাদিকেরা ১৭কোটি মানুষের জন্য কাজ করছে।আমলারা দুনীতি করলে সেগুলো জাতির সামনে নিয়ে আসা সাংবাদিকের কাজ।রোজিনা ইসলাম তাই করছে।
সাংবাদিক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, রোজিনা ইসলাম আন্তজাতিক ও দেশের একাধিক পুরুষ্কার প্রাপ্ত একজন নারী সাংবাদিক।স্বাস্থ্য বিভাগের দুনীতি নিয়ে প্রতিবেদন করে পাঠকদের চোখ খোলে দেওয়াই তার জন্য কাল হয়েছে।এভাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা থামিয়ে দেওয়া হলে সরকারই দুর্বল হয়ে পড়বে।রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি ও তাকে হেনস্তাকারীদের শাস্তির দাবী করছি।সাংবাদিকেরা কলম সৈনিক। তাদের কলম নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোজিনার ওপর জুলুমকারীদের বিচার চাই, শাস্তি চাই। মুক্ত সাংবাদিকতায় বাধা যত কালাকানুন আছে, সব বাতিল চাই।’