সিবিএন ডেস্ক:
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষকদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়াচ্ছে সরকার। তারা পেতে যাচ্ছেন এককালীন নগদ আর্থিক সহায়তা। এমপিওভুক্ত হননি, এমন শিক্ষক ও কর্মচারীদের প্রত্যেককে ঈদের পরে যথাক্রমে ৫ হাজার ও ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ অর্থ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনার কারণে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এ কারণে সরকারি অনুদানবঞ্চিত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের অনেকে এখন আর নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। কারো আবার চাকরিই নেই। এ অবস্থায় নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছুটা কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আবারও এককালীন নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে দেশের নন-এমপিও শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে সরকারের ব্যয় হবে ৮০ কোটি টাকা। ঈদের পরই এ অর্থ ছাড় করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের কথা বিবেচনা করে আবারও আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এ অনুদান ঈদের পরে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা সংগ্রহ করে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তাদেও বরাদ্দ পাওয়ার পর সারা দেশের কারিগরি, মাদরাসা ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় কর্মরত নন-এমপিও ৫১ হাজার ২৬৬ জন শিক্ষকের জন্য আলাদা বরাদ্দ চাওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নন-এমপিও শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেজন্য প্রকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য খুঁজে বের করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (ব্যানবেইস)। প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেইসে থাকা ৬৪ জেলার ৮ হাজার ৪৯২টি স্কুল ও কলেজের নন-এমপিও ৮০ হাজার ৭৪৭ জন শিক্ষক এবং ২৫ হাজার ৩৮ জন কর্মচারীসহ মোট ১ লাখ পাঁচ হাজার ৭৮৫ জনের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়।

ব্যানবেইস মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তালিকাভুক্ত ইআইএনধারী (শিক্ষা বোর্ডের বৈধ প্রতিষ্ঠান শনাক্তকরণ নম্বর) নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশাল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ তৈরি করে। এরপর তা স্থানীয় প্রাশাসনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়। সেই তালিকার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর ‘বিশেষ অনুদান’ খাত থেকে প্রাপ্ত অর্থ জেলা প্রশাসকদের কাছে সংশ্লিষ্ট নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুকূলে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়োছিল। কিন্ত এবার আর প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে এ অর্থ যোগান দেওয়া হবে না। অর্থ বিভাগের বাজেট থেকে এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে।