আফগানিস্তান থেকে হাত গুটাচ্ছে মার্কিন: আক্রমণ অব্যাহত রাখছে তালেবান

প্রকাশ: ৪ মে, ২০২১ ১০:২১ , আপডেট: ৪ মে, ২০২১ ১০:২৮

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


ছবি : হেলমন্দ প্রদেশে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাঁটি ক্যাম্প এন্থনিক থেকে বিদায় স্যালুট জানাচ্ছে মার্কিন সৈন্যরা ।

আবদুর রহমান খান

 

আফগনিস্তানের মৃত্যু উপত্যকা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দাম্ভিক সামরিক শক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা।

দীর্ঘ দু’দশক ধরে “অন্তহীন” যুদ্ধ চালিয়ে , আণবিক বোমা ছাড়া সব রকমের আধিনুক মারনাস্ত্র – যুদ্ধামিবান, ট্যাঙ্ক , সাঁজোয়াযান , কামান , বন্দুক , মেরিন সেনা, কমব্যাট ফোর্স- সব কিছু ব্যবহার করে, হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে, বিস্তীর্ণ জনপদ, পার্বত্য অঞ্চল ধংস করে দিয়ে এবার পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে ফিরে যাচ্ছে পর্যুদস্ত, ভগ্ন-হৃদয় দখলদার সেনার দল।

পহেলা মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী। রবিবার (২ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে আফগান সেনাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে যুদ্ধবিধস্ত দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দের প্রদেশে অবস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাঁটি ক্যাম্প এন্থনিক ।

আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের ভেতরে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত মার্কিন সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে বলে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট । জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সীমাহীন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন।

তবে পরাজিত সৈন্যদের এবং মার্কিনী জনগণের মনোবল চাঙ্গা রাখতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরও দেশটিতে মার্কিন উপস্থিতি বজায় থাকবে।

সোমবার ( ০৩ মে) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সখেদে এবং সদম্ভে বলেছেন, “আমরা ২০ বছর ধরে আফগান যুদ্ধে লেগে আছি এবং মাঝেমধ্যে আমরা ভুলে যাই কেন আমরা সেখানে প্রথমে গিয়েছিলাম। যারা নাইন ইলেভেনের হামলায় জড়িত তাদেরকে উৎখাতের জন্য আমরা আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়েছিলাম। গত ২০ বছর ধরে আমরা সেখানে এ কাজই করেছি। এখন আফগানিস্তান থেকে সেনারা দেশে ফেরত যাচ্ছে তার মানে এই না যে, আমরা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমরা আফগানিস্তান ছাড়বো না।”

তিনি তার ভাষায় বলেন, আফগানিস্তানের উন্নয়নের জন্য আমেরিকা অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

ব্লিংকেন বলেন, তালেবান যদি আবার ক্ষমতা দখল করে তাহলে আমাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

এ অবস্থায় আফগানিস্তানের কাবুল থেকে দূতাবাস কর্মীদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে সেখানে দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হবে না। খুব সামান্য কর্মীকে রেখে কাজ চালানো হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কিছু সেনা থাকবে।

নাখোশ হিলারি ক্লিনটন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার বিরোধিতা করে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এমন সিদ্ধান্তের ‘কঠিন পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্কবানী উচ্চারণ করেছেন।

নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হালার পর যুক্তরাষ্ট্র “ওয়ার অন টেরর” ঘোষণা দিয়ে যখন আফগানিস্তানে পূর্ণ সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেই অভিযানের পক্ষে একজন শক্ত সমর্থক ছিলেন হিলারি ক্লিনটন। ওবামা প্রশাসনে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।

গত রোববার ( মে ০২) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করে হিলারি বলেন,

সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুল সরকারের পতন হতে পারে এবং ক্ষমতা চলে যেতে পারে তালেবানের হাতে। এতে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আবার পুনরুত্থান হতে পারে। এই বিষয়গুলোর ওপর মার্কিন সরকারের আরও মনোনিবেশ করাও উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, হাজার হাজার আফগান; যারা যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র আর ন্যাটোর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের রক্ষা করাও জরুরি এবং তাদের মধ্যে যে কোনো শরণার্থী গ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি বৃহত্তর ভিসাদান কর্মসূচি চালু করা উচিত।

শুধু হিলারি নন আরেক সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইসও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে এর আগে কংগ্রেসের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক কমিটির সদস্যদের কথা বলে উদ্বেগ জানান। সেনা প্রত্যাহারের সরাসরি বিরোধিতাও করেন তারা।

থামছে না সংঘাত

ওদিকে, কাতারের রাজধানী দোহায় স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিতে যুদ্ধ বিরতির শর্ত না থাকায় মার্কিন বাহিনী আফগান ছাড়ার আগমুহূর্তে আবারও নতুন করে হামলা শুরু করে তালেবানরা।

যুক্তরাষ্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তালেবানের তালেবানদের চুক্তি অনুযায়ী দেশটি থেকে ন্যাটো জোটের সৈন্য প্রত্যাহার সমাপ্ত করার সময়সীমা ছিল গত ১ মে। তবে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা প্রত্যাহারে আরও বেশি সময় নেওয়াকে চুক্তি লঙ্ঘন বলে তালেবান বাহিনী ১ মে’র পর থেকে তাদের হামলা তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ।

আফগানিস্তানে সোমবার ( ০৩ মে) একদিনে ১৪১টি হামলা চালিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান।

হামলার এ খবর দিয়ে আফগান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তালেবানের ওই হামলা থেকে দেশটির কোনো প্রদেশ বাদ যায়নি। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন দেশটির নিরপত্তা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

আফগানিস্তানের সংবাদ মাধ্যম “টোলো নিউজ” এর এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশটিতে গত এক মাসে তালেবানের হামলায় অন্তত ৪৩৮ জন নিহত হয়েছে। সেইসঙ্গে আহত হয়েছে আরও অন্ততঃ ৫০০ জন ।

আফগান সরকার সোমবার( মে ০৩) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হেলমান্দ প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটি বুঝে নেওয়ার পর বেশ কয়েকটি অভিযানে কমপক্ষে ৬০ তালেবান নিহত হয়েছেন। এসব অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন সরকারি বাহিনীরও ৪০ সদস্য।

আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাওয়াদ আমান বলেছেন, বিদেশি সেনাদের সহায়তা ছাড়াই আফগান বাহিনী তালেবানদের ওপর এসব সফল অভিযান চালিয়েছে।

কেন এ আফগান যুদ্ধ

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরের টুইন টাওয়ারে কথিত সন্ত্রাসী হামলার অজুহাত তুলে অক্টোবর মাসে সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের নামে আমেরিকা ও ব্রিটেন আফগানিস্তানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে।

২০১৪ সালে পশিমা শক্তির যৌথ যুদ্ধ মিশনের সমাপ্তি টেনে আফগানিস্তানের দক্ষিণে কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি খালি করে দেয় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। এরপর আফগান বাহিনীর হাতে দেশব্যাপী সুরক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়। তারপর শুরু হয় আফগান পুনর্গঠনের নামে ন্যাটো-নেতৃত্বাধীন রেজোলিউট সাপোর্ট মিশন ।

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে আফগানিস্তানে আমেরিকানদের ৩,৫০০ সৈন্য এবং ন্যাটো বাহিনীর ৭০০০ সৈন্য মোতায়েন ছিল।

মার্কিকন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম এক যুদ্ধ চালাতে গিয়ে যুদ্ধবাজ মার্কিন প্রশাসন এতদিনে বুঝতে পেরেছে এ অন্যায় যুদ্ধে তাদের বিজয় আসবেনা; আর অনন্তকাল ধরে এটা চালিয়ে নেওয়া যাবে না। যত বেশিদিন তারা আফগানিস্তানে থাকবে তত বেশী তাদের ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে।

আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমেরিরার কতো সৈন্য নিহত এবং আহত হয়েছে বা কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব আজ পর্যন্ত প্রকাশ করেনি পেন্টাগন।

তবে যুদ্ধের মুল্য কতোটা তা নির্নয়ের জন্য আমেরিকার বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত এক প্রকল্পের প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১১ সাল পর্যন্ত ৭০,০০০ আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

আঞ্চলিক স্বার্থ বিন্যাস

আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত রাশিয়াকে বিতাড়িত করার যুদ্ধে শুরু থেকে পাকিস্তানকে ব্যবহার করেছে আমেরিকা। প্রথমে পাকিস্তানের মাটিতে মাদ্রাসা খুলে তালেবানদের অস্ত্র-শস্ত্র সজ্জিত করে যোদ্ধা বানিয়েছে আমেরিকা। তারপর সেই তালেবানরাই হয়ে ওঠে মার্কিনের গলার ফাঁস । এর পর তালেবান – আলকায়দা এবং সর্বশেষ আই এস বা ইসলামিক স্টেট নামের যোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হয় আমেরিকাকে। এ সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কাছ থেকে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য এবং সরাসরি সামরিক সহয়াতা নিতে হয় । এটা হয়ে পরে পাকিস্তানের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ।

ওদিকে, তালেবানদের কাছে বস্তুত পরাজয় মেনে মার্কিনীরা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে শুরু করায় দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিনের “স্ট্রাটেজিক পার্টনার” ভারত পড়েছে বেকায়দায়।

ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার পলিসি রিসার্স এর সিনিয়র ফেলো সুশান্ত সিং ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে এক নিবন্ধ প্রকাশ করে বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিনীদের চলে যাবার ফলে সেখানে তালেবানদের রাজত্ব পুনঃ প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেবে । হয় তারা সামরিক শক্তির বলে কৃহযুদ্ধজের মাধ্যমে কাবুলের ক্ষমতা দখল করে নেবে অথবা ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে দেশ শাসন করবে । তবে এর যেকোনো পরিণতি হবে ভারতের জন্য একটা ত্রিশঙ্কু অবস্থা।

তাই ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারকে এখন প্রকাশ্যে কিছু না বলে হলেও গোপনে তালেবান শক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, ভারত সরকার এতদিন আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থিত সরকারগুলির সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এমনকী যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত দেশটির অবকাঠামোগত উন্নতিতে আফগান সরকারের সহায়তায় ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এটা ছিল ভারতের দিক থেকে বাইরের কোন দেশকে দেওয়া সবচেয়ে বেশী পরিমাণ সাহায্য ।

সম্প্রতি তালেবানদের সাথে শান্তি আলোচনায় পাকিস্তান উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করলেও ভারত দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। এর ফলে আফগান সরকার বা তালেবানদের সাথে ভারতের কুটনৈতিক ঘনিষ্টতায় বরং ভাটা পড়েছে।

অবজার্ভার রিসার্স ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক কবির তেনেজা লিখেছেন, নিউ দিল্লী আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা সমর্থন করলেও প্রধানত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গিলানীর ওপর বেশী ভর করেছে। কিন্তু আফগান শান্তি আলোচনায় আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ভারত ভুমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

তাছাড়া আফগানিস্তানে উন্নয়ন সাহায্য বা জনগণ এর সাথে সম্পর্ক স্থাপনে ( পিপল টু পিপল কন্টাক্ট ) ভারতকে তার তৎপরতা চালাতে হয়েছে মার্কিন ও তাদের মিত্রদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। এখন যেহেতু সেই নিরাপত্তা আর থাকছে না , তাই ভারতকে এবার নতুন করে আফগানিস্তানের ছক সাজাতে হবে।

কাবুলস্থ সেন্টার ফর কনফ্লিক্ট এন্ড পিস স্টাডিজ – এর ডেপুটি ডাইরেক্টর হেকমাতুল্লাহ আজামী বলেছেন, ভারতকে অবশ্যই তালেবানদের সাথে সংলাপ শুরুর উদ্যোগ নিতে হবে। তবে তালেবানরা এখনই ভারতের সাথে তেমন কোন সংলাপে রাজি হবে কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

হেকমাতুল্লাহ আজামী মনে করেন, তালেবানদের সাথে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং সেখানকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ভবিষ্যত ভারত-আফগান সম্পর্কের টানাপোড়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

আফগানে আমেরিকার শিক্ষা

বিশ বছর আগে আফগানিস্তান থেকে তালেবানকে উৎখাতের লক্ষ্য নিয়ে আগ্রাসন শুরু করলেও আজ পর্যন্ত সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব হয় নি । বরং তালেবানের শক্তি মেনে নিয়ে তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হচ্ছে পশ্চিমাদের সম্মিলিত সামরিক শক্তিকে ।

আমেরিকার কাছে এখন আফগানিস্তান আর অগ্রাধিকারের বিষয় নয় । পেন্টাগনও তার সৈন্যদের আফগান মৃত্যুপুরীতে ফেলে রাখতে চাইছেনা।

এ প্রসঙ্গে চায়না ডেইলি পত্রিকা মন্তব্য করেছে, আমেরিকা তার গুরুত্বপুর্ণ শিক্ষাটি এখনে গ্রহণ করতে পারেনি। আর তা হল নিজেদের ধরনের গণতন্ত্র চালুর নামে দেশে দেশে সামরিক বল প্রয়োগের নীতি অকেজো হয়ে গেছে। এটা বাতিল করতে হব্য।

ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া – এসর দেশে মার্কিন সেনাদের বছরের পর পর মোতায়েন থাকার কারণে দেশগুলি অব অব্যাহত রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, উন্নয়নের স্থবিরতা, আর জণগনের চরম দুর্দশা।

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর মার্কীনিদের এবার ভাবতে হবে তারা বিশ্বের দেশে দেশে অন্যায় যুদ্ধ বন্ধ করবে নাকি এটা- ওটা ছুতা ধরে নতুন কোনো উত্তেজনার ক্ষেত্র তৈরীতে আবারো মনোযোগ দেবে।

 

ঢাকা (০৪ মে)