আবদুল মজিদ,চকরিয়া (কক্সবাজার):

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিংড়ি জোন রামপুর মৌজায় ৫০০ একর আয়তনের একটি মৎস্যঘেরে হামলা, লুটপাট ও তা-ব চালিয়েছে অস্ত্রধারী ডাকাতদল। ওইসময় ৩০-৩৫জনের ডাকাতদল শুরুতে ঘেরটিতে হানা দিয়ে অন্ততপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এরপর ঘেরটির সহকারি ম্যানেজার এবং কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অফিসকক্ষের আলমিরা থেকে মাছ বিক্রির নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং ঘেরের হিমাগারে রক্ষিত প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ ও দুইটি মোটর সাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় ডাকাতদলের সদস্যরা ঘেরটির সহকারি ম্যানেজার মিন্টু চৌধুরীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে উপজেলার চিংড়িজোন রামপুর মৌজার চোয়ারফাঁিড়স্থ উত্তর এমএল ঘোনায় ঘটেছে তা-বের এ ঘটনা। তবে রাতেই ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশের একটিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ততক্ষনে ডাকাতদল নির্বিঘেœ পালিয়ে যায়।

৩০-৩৫জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ঘেরটির মাছসহ মালামাল লুটের উদ্দেশ্যে এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন ঘেরটির পরিচালক চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুরাজপুর মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম।

তিনি বলেন, পাঁচবছর আগে মুল মালিক থেকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট মুমিনুর রহমান, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, মোয়াজ্জেম হোসেন শাওনসহ আমরা রামপুর মৌজার ৫০০ একর (প্রায় ১২শত কানি) আয়তনের উত্তর এমএল ঘোনাটি ইজারা নেন। আমাদের সঙ্গে জমি মালিকপক্ষের অংশিদার তৌফিকুল ইসলামও আছেন। ইজারা নেয়ার পর থেকে আমরা ঘেরটিতে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করে মৎস্যচাষ করে আসছি।

ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক দাবি করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে অতর্কিত ৩০-৩৫জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল মৎস্যঘেরে হানা দেয়। ওইসময় ডাকাতরা কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এরপর ঘেরের অফিসকক্ষে ঢুকে সহকারি ম্যানেজার ও কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অফিসকক্ষের আলমিরা থেকে মাছ বিক্রির নগদ ৫ লাখ টাকা এবং প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাছ ও দুইটি মোটর সাইকেল লুটে নিয়ে গেছে।

ঘটনার সময় ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে ঘেরটির সহকারি ম্যানেজার মিন্টু চৌধুরীকে অপহরণ করেছে। অপহৃতের গ্রামের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের মল্লিক চোবাহানপাড়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে। আমরা এখনো (শুক্রবার বিকাল পাঁচটা নগাদ) তাঁর খোঁজ পাইনি।

ঘেরটির জমির মালিকপক্ষের অংশিদার এবং পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, মৎস্যঘেরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলার সাহারবিলের কোরালখালীর আলোচিত নবী হোছাইন প্রকাশ নবী চৌধুরী। তাঁর নেতৃত্বে ৩০-৩৫জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ঘেরটি দখলে নিতে গোলাগুলি করেছে। ওইসময় ঘেরের কর্মচারীরা নবী হোছাইন ও আবু তৈয়বকে লাইটের আলোতে দেখেছে।

তিনি বলেন, ডাকাতদলের তা-বের ঘটনাটি রাতেই চকরিয়া থানার ওসিকে জানাই। এরপর তাঁর নির্দেশে থানার এসআই মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ততক্ষনে ডাকাতদল লুন্ডিত মাছসহ মালামাল নিয়ে নিবিঘেœ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এব্যাপারে আমাদের পক্ষথেকে থানায় মামলা রের্কড করার প্রস্তুতি চলছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মুহাম্মদ যোবায়ের বলেন, রামপুর চিংড়িজোনের মৎস্যঘেরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাটি রাতেই আমি জেনেছি। তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশের একটিদল পাঠাই, তবে ওইসময় ঘটনাস্থলে পুলিশ কাউকে পায়নি। ওসি বলেন, ঘেরটির ইজারা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘটনার সুত্রপাত বলে মনে হচ্ছে। তারপরও সংগঠিত ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।