বলরাম দাশ অনুপম :

এডভোকেট রনজিত দাশ। কক্সবাজারের কর্মীবান্ধব ত্যাগি এক রাজনীতিবিদের নাম। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি রাজনীতির পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন দিনই হিসাব করেন নি পাওয়া-না পাওয়ার। স্বাধীনতার স্বপক্ষের তথা আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার লক্ষ লক্ষ সনাতনী সম্প্রদায়ের অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের রাজনীতির জীবনে কোন দিনও বড় নেতা হতে চান নি, তৃণমুল পর্যায়ে কর্মী বান্ধব হয়ে ত্যাগের রাজনীতি করেছেন এডভোকেট রনজিত দাশ।
এডভোকেট রনজিত দাশের প্রথম রাজনীতিতে পর্দাপন হয় ১৯৮২ সালে স্বৈরশাসকের আমলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসাবে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের সীমানা পেরিয়ে ১৯৮৪ সালে কক্সবাজার সরকারি কলেজে ভর্তির পরপরই কলেজ ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তৎকালীন ইসলামী ছাত্র শিবিরের জিম্মি অবস্থা থেকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে ছাত্রলীগের নবীন বরণ অনুষ্ঠান করা হয়।
কলেজের রাজনৈতিক তৎপরতা দেখে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ১৯৮৫ সালে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রচার সম্পাদক এর দায়িত্ব অর্পন করা হয়। এসময় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলামের সঠিক দিকনির্দেশনায় একই সময়ে স্বৈরশাসক ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই করে সমগ্র জেলায় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার মাধ্যমে সকল নেতৃবৃন্দের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রিয়পাত্রে পরিনত হয়। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন তৎকালীন জাতীয় পার্টির গুন্ডা ও পুলিশ বাহীনির গুলিতে আওয়ামী লীগ কর্মী মরহুম শাহ আলম শাহাদাত বরণ করার গঠনায় গুলিবিদ্ধ হয় অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ; যার খবর প্রকাশিত হয়েছিল তৎকালীন জাতীয় দৈনিক বাংলার বাণীতে।
সাংগঠনিক তৎপরতা দেখে ১৯৮৮ সালে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
তৎসময়ে জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বের পাশাপাশি সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে গড়ে উঠা সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদেরও প্রধান সংগঠকের দায়িত্ব নিয়ে এরশাদ সরকারের ‘দেখা মাত্র গুলি’ আদেশ উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হয়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের শেষদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রয়াত আলমগীর চৌধুরী হিরু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জেলা আওয়ামী লীগ এর পরামর্শে ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে অ্যাডভোকেট রনজিত দাশকে জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক করা হয়।
যখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে শুরু হয় মামলা-হুলিয়া; বাসা-বাড়িতে ঘুমানো দুষ্কর; পুলিশের তল্লাশী প্রতিদিনের নৈমিত্তিক ব্যাপার। তম্মধ্যেও বিবিসির সংবাদের মাধ্যমে জরুরী অবস্থার ঘোষনা শোনে তাৎক্ষনিক রাজপথে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য।
১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, কক্সবাজার জেলা শাখার প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে জেলার মৃত প্রায় যুবলীগকে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সুসংগঠিত করা হয়। যার ফলশ্রæতিতে ১৯৯৯ সালের সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় জেলা যুবলীগ এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। যা অনুমোদিত হয় ২০০০ সালে। সেই থেকে অদ্যবধি জেলা যুবলীগ একটি মডেল সংগঠন হিসাবে কাজ করে আসছে। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হলে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করে যুবলীগের বিশাল কর্মী-বাহিনী নিয়ে কক্সবাজার শহরে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়; প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ হয়। এই সময়ে কর্মীবেষ্টিত অবস্থায় পুলিশ কয়েকদাফায় গ্রেফতার করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে ২০০৫ সালে একেএম মোজাম্মেল হক সভাপতি ও সালাহ উদ্দিন আহমদ (সিআইপি) সাধারণ সম্পাদক এর নেতৃত্বাধীন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ এর কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় এক যুগ নিষ্টা ও সততার সাথে সাংগঠনিক সম্পাদক এর দায়িত্ব পালনকালে গোটা জেলায় ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতা সৃষ্টি করা হয়। ২০১৬ সালের জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যা অদ্যবধি নিরলসভাবে নিজের উপর অর্পিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর দলীয় দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তাছাড়া এডভোকেট রনজিত দাশ দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় সনাতনী সম্প্রদায়ের বেদখলিয় মঠ-মন্দির, শ্মশান উদ্ধারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাছাড়া জেলার লক্ষ লক্ষ সনাতনী সম্প্রদায়ের যেকোন সমস্যায় ঝাপিয়ে পড়েছেন।